অনলাইন ডেস্ক : জনসচেতনতামূলক প্রচারাভিযান ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রশিক্ষণ সত্বেও কানাডায় গাঁজা সেবনকারিদের এক তৃতীয়াংশ স্বীকার করেছে যে তারা উচ্চ মাত্রায় গাঁজা সেবনের পর গাড়ির ড্রাইভিং সিটে বসেছে। সরকারি একটি সমীক্ষায় এ তথ্য জানা গেছে। গত জানুয়ারিতে পাবলিক সেফটি অ্যান্ড ইমার্জেন্সি প্রিপেয়ার্ডনেস কানাডা এই সমীক্ষাটি পরিচালিত করে। স¤প্রতি ওই সমীক্ষার ফলাফল অনলাইনে পোস্ট করা হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে ৩৩ শতাংশ কানাডিয়ান স্বীকার করেছেন যে তারা গাঁজার প্রভাব নিয়ে গাড়ি চালিয়েছেন। এছাড়া ২৬ শতাংশ বলেছে, তারা জীবনের কোন না কোন সময় গাঁজা সেবনের পর রাস্তায় নেমেছেন।
সমীক্ষায় মোট ২ হাজার ১৯৩ জনের মতামত নেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ৯০% অনলাইনে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। বাকি ১০ শতাংশ সরাসরি টেলিফোনে কথা বলেছেন।
জরিপে অংশগ্রহণকারিদের কর্মকান্ড ও আচরণের ব্যাখ্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে ১০ শতাংশ বলেছেন তারা এ ধরনের ড্রাইভিংয়ের ঝুঁকি সম্পর্কে অজ্ঞ ছিলেন বা তারা বিষয়টি অনুধাবন করতে পারেন নি। অন্যদিকে ২৩ শতাংশ গাঁজাসেবী বলেছেন, তারা এটিকে কোন সমস্যা মনে করেন না।
উত্তরদাতাদের ৩০% বলেছেন যে, তারা গাড়িতে ভ্রমণের আগেই জানতেন চালক গাঁজা সেবন করেছেন। বাকিরা বলেছেন তারা চালকের আচরণ সম্পর্কে জানতেন না।
প্রসঙ্গত, কানাডায় ২০১৯ সাল থেকে গাঁজা বৈধ করা হয়েছে। তবে ফেডারেল সরকার এর আগে থেকেই শরীরে গাঁজার প্রভাব নিয়ে গাড়ি চালানো সম্পর্কে কানাডিয়ানদের সতর্ক করে আসছে। মাদকাসক্ত ড্রাইভিং সম্পর্কিত একটি সরকারি ওয়েবপেজে বলা হয়েছে, ‘মতাল অবস্থায় গাড়ি চালানোর কোন অজুহাত নেই। মাতাল চালকের যাত্রী হওয়াও ঝুঁকিপূর্ণ’। এ ধরনের ড্রাইভিংয়ের বিপদ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে পাবলিক সেফটি কানাডা ২০১৭ সাল থেকে ‘ডোন্ট ড্রাইভ হাই’ নামে একটি প্রচারাভিযান চালিয়ে আসছে। এছাড়া ফেসবুক, টেলিভিশন ও রেডিওসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে প্রচার প্রচারণা চলছে।
মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর বিরুদ্ধে কাজ করা অলাভজনক প্রতিষ্ঠান মাদার্স এগেইনস্ট ড্রাঙ্ক ড্রাইভিং (এমএডিডি) বলেছে, গাঁজা সেবনকারিদের মধ্যে একটা ‘মিথ’ চালু আছে যে, ‘গাঁজা ড্রাইভিং ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে না’। অনেকে আবার আরও কিছুটা বাড়িয়ে বলেন যে, ‘গাঁজা একজনকে আরো ভাল ড্রাইভার বানিয়ে দেয়।’ এম এ ডি ডি কানাডার আইন বিষয়ক পরিচালক এরিক ডামসচেট বলেন, দুর্ভাগ্যজনক এসব ‘মিথ দূর করা না গেলে যতই আইন করা হোক আর প্রশিক্ষণ দেয়া হোক মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো বন্ধ করা যাবে না। তিনি মাদকাসক্ত চালককে শনাক্ত ও ধরার জন্য পুলিশকে ‘ওরাল ফ্লুইড স্ক্রিনিং প্রযুক্তি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে বলেন, এতে সহজেই বুঝতে পারা যাবে যে কেউ মাদকের প্রভাব নিয়ে চালাচ্ছে কি না। সূত্র : সিবিসি