দাবানলের ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন জনপদ

অনলাইন ডেস্ক : দীর্ঘায়িত দাবানলের ধোঁয়ায় ছেয়ে গেছে কানাডা। যার প্রভাব পড়েছে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরের আকাশেও। বেড়েছে দূষণ মাত্রাও। দূষণের প্রভাব পড়েছে উত্তর আমেরিকার একাধিক স্থানে। লাখ লাখ মানুষের দাবানলের ধোঁয়ায় দমবন্ধ হওয়ার মতো অবস্থা। গর্ভবতী থেকে শুরু করে বয়স্ক এবং যাদের গুরুতর অসুখ রয়েছে, তাদের সাবধানে থাকার জন্য দেওয়া হয়েছে পরামর্শ। ইতোমধ্যে উত্তর আমেরিকার একাধিক স্থানের আকাশ দখল করেছে দাবানলের কমলা-বাদামী ধোঁয়া। এতে দূষণের মাত্রা শুধু বাড়েইনি, সেই সঙ্গে ঝাপসা দেখাচ্ছে দিনের আকাশ। এই ঘটনার মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ। কানাডা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দাবানলের এই ভয়াবহতা দেশটির ইতিহাসে এই প্রথম।

গত ২৮ জুন, বুধবার পর্যন্ত কানাডার ৮ মিলিয়ন হেক্টর অর্থাৎ ২০ মিলিয়ন একর জমি দাবানলের কারণে পুড়ে গেছে। ১৯৮৯ সালে দাবালনের জেরে ৭.৩ মিলিয়ন হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এটাই ছিল কানাডার ইতিহাসে রেকর্ড। এবার সেই রেকর্ডও ছাপিয়ে গেছে। এদিকে, দাবালন এখনও নিয়ন্ত্রণে না আসায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কানাডার প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অগ্নি বিশেষজ্ঞ ইয়ান বোলাঞ্জার। আগুনের ভয়াবহতা যে কতটা বড়, তা বোঝানো কঠিন বলে জানান তিনি। দাবানলের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন কানাডার পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের প্রধান জ্যাক চেন-ও। আগুনে যে পরিমাণ কার্বন মনোঅক্সাইড উৎপন্ন হচ্ছে, তা পরিবেশকে দূষিত করছে বলে জানান। এতে ১০ থেকে ২০ গুণ দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছেন তিনি। কানাডার কোপার্নিকাস অ্যাটমোস্ফিকার মনিটরিং সার্ভিস রিপোর্ট করছে, গত মে মাসের শুরু থেকে দাবানলের জেরে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন টন কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন হয়েছে।

২০২১ সালে সমস্ত উৎস থেকে দেশের মোট গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের ৪৪ শতাংশের সমান। দাবানলের জেরে বায়ুতে দূষণ মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশেষজ্ঞরা। দাবানলের ধোঁয়ায় উপস্থিত সূ² কণাগুলো শ্বাসনালীর ক্ষতিসাধন করতে পারে বলে মনে করছেন তারা। তবে, ছোট শিশু, গর্ভবতী মহিলা, ধূমপায়ী, বয়স্ক এবং যারা দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন, তাদের ক্ষেত্রে এই দাবালন বিপজ্জক বলে আশঙ্কার কথা শুনিয়েছে কানাডা সরকার। মানুষের পাশাপাশি দাবানলের ধোঁয়ার কণাগুলি বন্যপ্রাণীর উপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ম্যাথিউ মিচেল। প্রাণীদের ফুসফুসের ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে বলে মনে করছেন তিনি। সবেচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলতে পারে তিমি ও ডলফিনের মতো প্রাণীদের।
সূত্র ঃ সিএনএন