অনলাইন ডেস্ক : করোনায় পাল্টে যাচ্ছে জীবন-যাত্রা। জীবিকার চিত্রেও ব্যাপক ফারাক তৈরী হয়েছে। বিশেষ করে নিউইয়র্ক সিটির রাস্তা এবং অলি-গলিতে এখন ভিন্ন চিত্র। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু রাস্তায় যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করে সেখানে রেস্টুরেন্টের চেয়ার-টেবিল সাজানো হয়েছে। ভেতরে বসে খাবার/পানের অনুমতি না থাকায় রেস্টুরেন্ট/বার এমন প্রক্রিয়ায় নিজেদের ব্যবসা কোনমতে চালু রাখার চেষ্টা করছেন। শুধু তাই নয়, রাস্তায় যারা বিভিন্ন খাদ্য-পণ্যের ভ্রাম্যমান দোকান বসিয়েছিলেন, তারা আইটেমে পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। মহামারির সময় সম্পূর্ণ লকডাউন থাকায় খাদ্য-সামগ্রীর দোকানছাড়া কেউই রাস্তায় দাঁড়াতে পারেনি। এ অবস্থায় অনেকেই পণ্য-সামগ্রিতে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, স্বাস্থ্যবিধির পরিপূরক সাবান, ডেটল, পিপিই ইত্যাদির সমাহার ঘটিয়েছেন। এগুলো বিক্রয়ে বাধা নেই প্রশাসন থেকে।
অথচ আগে এসব দোকানে বিক্রি হতো ধর্মীয় বই, টুপি, তসবি, আতর, পাঞ্জাবী, হিজাব ইত্যাদি। কেউ কেউ টাটকা শাক-সব্জি, পাকা আম, লিচু, পেয়ারাও বিক্রি করেছেন। জ্যাকসন হাইটসের ব্যস্ততম রাস্তায় খিলি পান আর ঝাল-মুড়ি বিক্রির সেই দৃশ্য এখন নেই। সেগুলোতেও হ্যান্ড স্যানিটাইজার আর মাস্ক বিক্রি হচ্ছে। বৈশাখী উৎসবসহ পথমেলার ঢোলক হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত শফিক মিয়া বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসে ৭৩ স্ট্রিটে স্টার্লিং ন্যাশনাল ব্যাংকের উল্টোপাশে খিলি-পানের ব্যবসা করতেন। দৈনিক গড়ে একশত ডলারের মত আয় হতো। করোনার প্রকোপ যখন চরমে উঠে অর্থাৎ এপ্রিল এবং মে মাসে সেই খিলি পানের দোকানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার আর মাস্ক বিক্রি হয়েছে দৈনিক গড়ে ৪ শত ডলার করে।
শফিক ১০ জুলাই জানান, এখন বিক্রি কমে গেছে। কারণ, সবকিছু পুনরায় স্বাভাবিক হওয়ায় মানুষ আগের মত আর মাস্ক ক্রয় করেন না। দামও বেশি নেয়া যায় না। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, দোকানের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া। এসব দোকানের অধিকাংশই প্রবীণ প্রবাসীরা চালাচ্ছেন।
জানা গেছে, এপ্রিলে মাস্ক আসতো চীন থেকে। তবে, মে মাস থেকে বিভিন্ন দেশ ছাড়াও অভ্যন্তরীণভাবেও মাস্ক তৈরী শুরু হওয়ায় মূল্য কমেছে অনেকাংশেই। এছাড়া, সিটি প্রশাসন থেকেও মাঝেমধ্যেই ফ্রি বিতরণ করা হয়। তবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার সবসময়ই ক্রয় করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।