অনলাইন ডেস্ক : দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর তিন মাসে মুঠোফোনের গ্রাহক কমেছে ৪০ লাখ। এ হিসাব গত মার্চ থেকে জুনের। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) প্রতি মাস শেষে মুঠোফোন গ্রাহকের সংখ্যা প্রকাশ করে। জুন শেষের হিসাবে দেখা যায়, মোট গ্রাহক দাঁড়িয়েছে ১৬ কোটি ১৩ লাখ।
বিটিআরসি সর্বশেষ ৯০ দিনে একবার ব্যবহার করলেই তাকে সক্রিয় গ্রাহক হিসেবে গণ্য করে। অবশ্য একজন গ্রাহকের একাধিক সিম (গ্রাহক শনাক্তকরণ নম্বর) থাকতে পারে।
আলোচ্য সময়ে সবকটি অপারেটরের গ্রাহকই কমেছে। সবচেয়ে বড় অপারেটর গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৪৫ লাখে, যা মার্চ শেষে ৮ লাখ বেশি ছিল। দ্বিতীয় শীর্ষ অপারেটর রবি আজিয়াটার গ্রাহক দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৯৭ লাখ, যা মার্চ শেষে ১৭ লাখ বেশি ছিল।
বাংলালিংকের গ্রাহক দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৪০ লাখ, যা মার্চের তুলনায় ১৪ লাখ কম। অন্যদিকে সরকারি অপারেটর টেলিটকের গ্রাহক দাঁড়িয়েছে ৪৭ লাখ ৬০ হাজার, কমেছে দেড় লাখের মতো।
গ্রাহক কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে অপারেটরেরা করোনার কারণে মানুষের আয় কমে যাওয়া এবং চলতি ২০২০–২১ অর্থবছরের বাজেটে কর বাড়ানোকে দায়ী করেন। অপারেটরগুলো বলছে, বাজেটের পর মানুষ ব্যবহার কমিয়েছে। গ্রামীণফোনের আয় কমেছে বলে তাদের আর্থিক বিবরণীতেই দেখা যায়।
এ বিষয়ে রবি আজিয়াটার চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেন, ‘কর বাড়লে সাধারণ মানুষ ব্যবহার কমিয়ে সমন্বয় করেন। এর মাধ্যমে সার্বিকভাবে সরকার ও অপারেটরের রাজস্ব কমে যায়। আমরা যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলাম, সেটাই হচ্ছে।’
বাংলালিংকের হেড অফ কর্পোরেট কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড সাস্টেনিবিলিটি আংকিত সুরেকা বলেন, ‘করোনাকালে সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবিকা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছে। এছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও চলমান বন্যার কারণে অনেকেই অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির সন্মুখীন হয়েছেন, যা তাদের সামগ্রিক ব্যয়ের উপর প্রভাব ফেলছে। আমাদের ধারণা, এটিই সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা কমে যাওয়ার মূল কারণ।’ তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া বাজেটে কথা বলা ও ইন্টারনেটের ওপর সম্পূরক শুল্ক বেড়ে যাওয়াও সাধারণ মানুষের খরচও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বিষয়টিও আরেকটি বড় কারণ বলে আমরা মনে করি।’
উল্লেখ্য, এবারের বাজেটে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোয় প্রতি ১০০ টাকা ব্যবহারে ২৫ টাকা কর হিসেবে পায় সরকার। আর ইন্টারনেটে তা ১৮ টাকার মতো।
ব্রডব্যান্ড গ্রাহক কমেছে
করোনাকালে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গ্রাহক বেড়েছে। জুন শেষে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গ্রাহক দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮৬ লাখ। যা মার্চ শেষে ৮১ লাখের মতো ছিল। ইন্টারনেট সেবাদানকারীরা দাবি করেন, ব্রডব্যান্ডের একটি সংযোগের বিপরীতে চার থেকে পাঁচজন গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।
করোনাকালের শুরুর দিকে মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশ কমে গিয়েছিল। মে ও জুনের হিসাবে তা আবার বাড়তি। জুনে মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ৪৯ লাখ, যা মার্চের তুলনায় তিন লাখের মতো কম। মে মাসের তুলনায় জুন শেষে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বেড়েছে ৯ লাখের মতো।
ইন্টারনেটের ক্ষেত্রেও ৯০ দিনের মধ্যে একবার ব্যবহার করলে তাকে গ্রাহক হিসেবে গণ্য করা হয়।