অনলাইন ডেস্ক : তিন মাস আগে মার্চ মাসে দলীয় বিদ্রোহের কারণে মধ্য প্রদেশ হাতছাড়া হয়েছিল কংগ্রেসের। ক্ষমতা ফিরে পেয়েছিল বিজেপি। এবার কি সেই নাটকেরই পুনরাবৃত্তি ঘটতে চলেছে কংগ্রেস শাসিত রাজস্থানে? প্রশ্নটি এই মুহূর্তে বিরাটভাবে আলোচিত।

মধ্য প্রদেশের মতো রাজস্থানেও কংগ্রেসের সঙ্কটের নেপথ্যে বিজেপির উস্কানি রয়েছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট স্বয়ং। বলেছেন, বিজেপি কংগ্রেস ভাঙাতে কোটি কোটি টাকা নিয়ে আসরে নেমেছে।

মধ্য প্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে ২৪ জন বিধায়ক নিয়ে দলত্যাগ করেছিলেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। পতন ঘটেছিল কমলনাথের সরকারের। রাজস্থানে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব চরম আকার নিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট ও উপ মুখ্যমন্ত্রী শচিন পাইলটের মধ্যে। দলীয় অনুগামীদের সঙ্গে নিয়ে শচিন দিল্লি এসে দেখা করেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও রাহুলের সঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন। শিগগিরই মিটমাট না হলে দলে ভাঙন অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে। প্রবীন কংগ্রেস নেতা কপিল সিবালের টুইটেও সেই আশঙ্কা প্রকাশ পেয়েছে। তিনি লিখেছেন, ‘খুবই দুশ্চিন্তা হচ্ছে। ঘোড়া আস্তাবল ছেড়ে পালানোর পর কি ঘুম ভাঙবে আমাদের?’

নবীন নেতা শচিনের নেতৃত্বেই ২০১৮ সালের শেষে বিজেপিকে হারিয়ে কংগ্রেস রাজস্থান দখল করে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী করা হয় প্রবীণ অশোক গেহলটকে। শচিনকে করা হয় উপমুখ্যমন্ত্রী ও দলের সভাপতি। প্রবীন–নবীনে রাজনৈতিক টানাপড়েন সেই থেকে বেড়ে চলেছে। গত রাজ্যসভার ভোটে কংগ্রেসের ভোট ভাঙাতে বিজেপি তৎপর হয়। অভিযোগ, সেই সময় দল ভাঙানোর জন্য শচিন অনুগামী ৩ কংগ্রেস বিধায়ককে ২৫ কোটি রুপির টোপ দেওয়া হয়। অগ্রিম নাকি জমা পড়েছিল ব্যাংক খাতায়। মুখ্যমন্ত্রী সেই অভিযোগের তদন্ত শুরু করেন। সরকারি তদন্তকারী দল স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ (এসওজি) শচিনের বয়ান জানতে তাঁকে নোটিশ পাঠায়। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন উপমুখ্যমন্ত্রী শচিন পাইলট। দলীয় নেতৃত্বের কাছে তাঁর অভিযোগ, দল ও সরকারে বারবার তাঁকে কোণঠাসা করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। অপমান করা হচ্ছে। সভাপতি পদ কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। অভিযোগ, দুই নেতার এই কাজিয়ায় ইন্ধন জোগাচ্ছে বিজেপি। মধ্য প্রদেশে ঘটে যাওয়া নাটক রাজস্থানেও তারা মঞ্চস্থ করতে চাইছে।

রাজস্থানের ২০০ আসন বিশিষ্ট বিধানসভায় কংগ্রেসের সদস্য ১০৭। আরজেডি, সিপিএম ও ভারতীয় ট্রাইবাল পার্টির ৫ বিধায়ক কংগ্রেসের সমর্থক। আর সমর্থন রয়েছে ১২ স্বতন্ত্র বিধায়কের। শচিনের অনুগামী ২৩ জন। রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্ব কলকাঠি নাড়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, কংগ্রেস অভ্যন্তরীণ সমস্যায় জর্জরিত। রাজ্যে স্থিতিশীল সরকার একমাত্র বিজেপিই দিতে পারে।