অনলাইন ডেস্ক : প্লাস্টিক এখন সর্বত্র। প্লাস্টিক নদী, হ্রদ, সমুদ্র দূষণ করছে। বন্য প্রাণীর ক্ষতি করছে। আমাদের খাওয়ার পানিতে ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা (মাইক্রোপ্লাস্টিক) ছড়িয়ে পড়ছে। এ কারণে কানাডার সরকার আগামী বছর থেকে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। গুড নিউজ নেটওয়ার্কের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবছর কানাডীয়রা ৩০ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলে দেয়। এর মধ্যে মাত্র ৯ শতাংশ পরিশোধন করা যায়। অর্থাৎ, অধিকাংশ প্লাস্টিক জমিতে গিয়ে পড়ে। ২৯ হাজার টন প্লাস্টিক প্রাকৃতিক পরিবেশে চলে আসে।
৭ অক্টোবর কানাডায় পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী জোনাথন উইলকনসিন ঘোষণা দেন, সরকারের পরবর্তী লক্ষ্য হচ্ছে ২০৩০ সালের মধ্যে প্লাস্টিক বর্জ্য শূন্যে নামিয়ে আনা। এ পরিকল্পনায় বন্য প্রাণী ও পানি সুরক্ষা পাবে। এতে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমবে এবং কর্মসংস্থান বাড়বে। এ পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার নিষিদ্ধ করা। প্লাস্টিক ব্যাগ, স্ট্র, গেরস্থালির নানা পণ্য এখন পরিবেশে মিশে যায়। এসব পণ্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে রিসাইকেল করা হয়। এসব পণ্যের বিকল্পও পাওয়া যায়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধের পক্ষে। তিনি বলেছেন, কানাডা প্লাস্টিক বর্জ্য হ্রাস করতে এবং বিশ্বের মহাসাগরগুলো রক্ষার জন্য ২০২১ সালের প্রথম দিকে স্ট্র, ব্যাগ এবং কাটলারি–জাতীয় কিছু একক ব্যবহারের প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা করেছে।
কানাডার সরকারের পক্ষ থেকে ছয় ধরনের প্লাস্টিক পণ্য নিষিদ্ধের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে প্লাস্টিকের ব্যাগ, স্ট্র, নাড়ানি, সিক্স প্যাক রিং, চামচ-ছুরিসহ রান্নাঘরের জিনিসপত্র, রিসাইকেল করা যায় এমন খাবারের প্যাকেট। গত সপ্তাহে ওই তালিকা প্রকাশ করা হয়।
কানাডা সরকারের পরিকল্পনায় প্লাস্টিক পুনরুদ্ধার ও রিসাইকেল প্রক্রিয়ায় উন্নতির প্রস্তাবও রয়েছে, যাতে অর্থনীতি ঠিক রাখার পাশাপাশি পরিবেশ সুরক্ষিত থাকে। কানাডা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে রিসাইকেল অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ আকর্ষণ ও এখানে প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে প্লাস্টিক পণ্য দীর্ঘমেয়াদি করার ওপর জোর দেওয়া হবে।
কানাডার সরকারের দেশব্যাপী শূন্য প্লাস্টিক বর্জ্য লক্ষ্য অর্জনে ফেডারেল, প্রাদেশিক ও আঞ্চলিক সরকার সবাই সম্মতি জানিয়েছে। কানাডা সরকার প্লাস্টিক নিয়ে যে পদক্ষেপ নিচ্ছে, তাতে পরিবেশের জন্য ভালো খবর হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।