বিদ্যুৎ সরকার : বছরের প্রায় সিংহভাগ জুড়েই থাকে দাপুটে শীতের প্রকট প্রভাব। এসব কিছু জেনেও সৃজিতকে আসতে হলো উত্তর আমেরিকার শীত প্রধান এ দেশে। সৃজিত ছবি আঁকে। ছবি আঁকাটা তার নেশা এবং পেশা। ছবির জন্য সে সবকিছু বিসর্জন দিতে প্রস্তুত।
শান্তিনিকেতনের কলা ভবনের শেষ ধাপ অতিক্রম করে অভারসিজ স্কলারশিপ নিয়ে বর্তমানে সে টরন্টো ইউনিভার্সিটির ফাইন আর্টস ফেক্যাল্টির প্রবাসী শিক্ষানবিশ। প্রায় মাস ছয়েক যাবত টরন্টোর বাংলা টাউনখ্যাত ড্যানফোর্থের একটি এপার্টমেন্টের স্টুডিও রুমে বাস করছে সে। ভাগ্য সুপ্রসন্ন বলেই একচিলতে একটি বেলকনিও বোনাস হিসেবে পেয়ে গেছে। আর বাকি সব কিছু লাগোয়া। তবুও সৃজিতের ছোট্ট এ গৃহকোণটি ভীষণ পছন্দের। সময় পেলে আনমনে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে ছবি আঁকে। সামারের প্রতিটা বিকেল সে একাকী বেলকোনিতেই কাটিয়ে দিল। হোম সিকনেস নয় এমনিতেই সংগোপনে বন্ধুদের কথা ভাবতে তার ভাল লাগে। অবশ্য বাড়ির প্রিয় সদস্যদের কথা মাঝে মাঝে যে ভাবে না, তা নয়। বন্ধু প্রিয় মন এখানে এখনো বন্ধুবিহীন, ভেবে অবাক হতে হয়। তবুও সৃজিত আশাবাদী অচিরেই একটা দুটা বন্ধু জুটে যাবে নিশ্চিত। বন্ধু নির্বাচনের ব্যাপারে সৃজিত অনেকটাই চ্যুজি। যার কারণে মনের মতো বন্ধু খুঁজে পেতে তার একটু দেরি হচ্ছে হয়তো। একবার কারোর সাথে বন্ধুত্ব হয়ে গেলে নির্ঘাত তা আজীবন অটুট রয়ে যাবে, একটুও ভাঙ্গবে না মচকাবে না।
সপ্তাহে মোট তিনটি ক্লাসে এটেন্ড করতে হচ্ছে তাকে। বাকি দিনগুলোতে কিছু হোম ওয়ার্ক থাকে অবশ্য। এছাড়াও নিজের ঘর পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা, কাপড়-চোপড় ধোয়া এবং কিছু রান্না-বান্না সাপ্তাহিক রুটিন মাফিক কাজ থাকে সৃজিতের। আর যতটুকু সময় অবশিষ্ট থাকে তা তার মনোরঞ্জনের জন্যই ব্যয় করে। যেমন আউটডোর পেইন্টিং, ফটোগ্রাফি, সবুজ বনভ‚মি বিচরণ, ভাল মুভি দেখা ভীষণভাবে অন্তর্ভুক্ত। দেশী-বিদেশী যেকোন সংগীত বা মিউজিক তার পছন্দ। সারাক্ষণ তার ঘরে লো ভলিউমে মিউজিক বাজতে থাকে। এমনকি রাতের নির্জনে মিউজিক বাজতে বাজতে টাইমারের কল্যাণে একসময় থেমে যায় অপনা থেকেই। সৃজিত তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।
পাহাড়ের উচ্চতা তাকে বিশাল হতে উৎসাহিত করে, মানবিক হতে সাহায্য করে, বিনয়ী হতে অনুপ্রাণিত করে। পাহাড় তার কাছে মস্ত একটি দৃষ্টান্ত মানুষ হয়ে নিজেকে গড়ে তোলার। তারই কিছুটা প্রভাব মিলে তার সমসাময়িক জল রং এ আঁকা ল্যান্ডস্কেপগুলোতে। সৃজিত পাহাড়কে যেমন ভালোবাসে তেমনি ভালোবাসে সবুজ বনভ‚মি। পাহাড়ের উপত্যকা জুড়ে সবুজের হাতছানি তাকে প্রতি নিয়ত আরও বেশি পাহাড় প্রেমী করে তোলে। দেশে থাকাকালীন অবস্থায় ফুরসত পেলেই পাহাড়ের কাছে ছুটে যেতো ইজেল আর রং তুলি সাথে নিয়ে। যতটা সময় সেখানে থাকতো এর সিংহভাগ সময়ই কাটাতো পাহাড় আর সবুজ বনভ‚মির ছবি এঁকে এঁকে। শিলং, দার্জিলিং, সিকিমের গ্যাংটক থেকে শুরু করে কুলু মানালি, সিমলা এসব নামজানা পাহাড় ছাড়া অন্যান্য নাম না জানা পাহাড়ের আঁকা ল্যান্ডস্কেপ তার সংরক্ষণে রয়েছে।
সুজান একই ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট। সেও সৃজিতের মতো প্রকৃতি প্রেমি ছবি আঁকিয়ে। স¤প্রতি সমাপ্ত বার্ষিক প্রদর্শনীতে তার আঁকা কয়েকটি চিত্রকর্ম দেখে তাই মনে হয়েছে সৃজিতের। তাই আগ বাড়িয়ে সৃজিতই সুজানের সাথে পরিচিত হয়ে নিল।
– আই এম সৃজিত।
– নাইস টু মিট ইয়্যু, দিস ইজ সুজান। হয়ার আর ইয়্যু ফ্রম?
– আই এম ফ্রম ইন্ডিয়া। আই থিং ইয়্যু আর অলসো ফ্রম এশিয়া?
– পার্সিয়েলি কারেক্ট, মাই প্যারেন্টস আর ফ্রম বাংলাদেশ
বাট আই ওয়াজ বর্ন এন্ড ব্রটাপ হিয়ার।
– হ্যাভ য়্যু বিন ইন বাংলাদেশ এভার?
– ইয়েস, টু টাইমস ক্যজ মাই ফাদার ইউজ টু ভিজিট মাই গ্র্যান্ড ফাদার দেয়ার।
– দ্যাটস হোয়াই আই ফাইন্ডস সাম এসেন্স অফ দেট ল্যান্ড ইন য়্যুর ল্যান্ডস্কেপ, স্পেশিয়েলি দি বোটস অন দ্যা রিভারস।
– ইটস ট্রু, বোটস আর ডিফারেন্ট এন্ড বিউটিফুল। আই ট্রাইড টু প্রেজেন্ট দিজ ইন মাই পেইন্টিংস টু।
– মাই ফোরফাদার ওয়ার ইন বাংলাদেশ বিফোর ফরটি সেভেন। দ্যান, উই মাইগ্রেটেড ইন ইন্ডিয়া লেইটার।
– বেসিক্যালি আওয়ার রুটস অয়ার ইন বেঙ্গল, ইজ নট ইট?
– শতভাগ সত্যি।
– বাহ্, তুমিতো দেখছি ভালোই বাংলা বলতে পারছো!
– শুধু ‘ভালোই’ না, ভালোর চেয়ে ভালো বলা চলে। বাসাতে আমরা সবসমই বাংলা চর্চা করে থাকি।
– তা’হলে আমরা কেন শুধু শুধু আমাদের প্রিয় ভাষাকে জেনে-শুনে দূরে ঠেলে দিচ্ছি।
– তাইতো!
– এখন থেকে আমরা যতটা সম্ভব আমাদের প্রিয় বাংলা ভাষাতেই কথা বলবো কেমন।
– অবশ্যি।
আজ ও কাল ছুটি। তাই, সক্কাল সক্কাল সুজান ও সৃজিত রং-তুলি সাথে ইজেল, কিছু খাবার-দাবার ও গরম-ঠান্ডা পানীয় নিয়ে চলে এলো লেক অন্টারিওর কুল ঘেঁষে ব্লাফার্স পার্ক এলাকায়। এক পাশে সবুজে ঘেরা ছোট্ট পাহাড় অপরদিকে শান্ত নীল জলরাশি। আকাশটা নীল বলেই জলের রং এমন দেখাচ্ছে মনে হয়। বড় বড় পাথর লেকের পাড়কে আরও দৃষ্টি নন্দন ও শৈল্পিক করে তুলেছে। কোথাও আবার ধুঁ ধুঁ বালি। ছোট্ট জলাশয়ে ভিনদেশী হাঁসদের উড়াল। মন ভালো করার জন্য এসমস্ত আয়োজন মোটেও অপ্রতুল নয়। সৃজিত ও সুজান এর আগেও বার কয়েক এখানটায় এসেছে কিন্তু দুজনেই আলাদাভাবে একা একা। তাই, আজকের আসাটা অবশ্যিই ব্যতিক্রম। একটি চাদর বিছিয়ে এর উপর সব কিছু সাজিয়ে রেখে ইজেল দুটো দার করিয়ে নিল। রং তুলি বের করে ইজেলে রং চাপিয়ে দুজন দুদিকে মুখ করে ছবি আঁকার প্রস্তুতি নেয়। একজন আঁকছে সবুজ পাহাড়ের ছবি অন্যজন পাল তোলা নৌকার। দুপুরে একটু ব্রেক নিয়ে স্যান্ডউইচ, আপেল জুস খেয়ে গরম কফির মগে চুমুক দিতে দিতে শিল্প-কলা বিষয়ক আলোচনায় মগ্ন হয়ে পড়লো ওরা দুজনে। সমকালীন চিত্র কলা, সুরিয়েলিজম, কিউবইজম, পাশ্চাত্যের শিল্প কলা। নীল আকাশটা কেমন করে হঠাৎ আলোহীন কালো হয়ে গেল! এ দেশের আবহাওয়ার স্বভাবটাই অমন। বলা নেই কওয়া নেই পলকেই ঝলক মেরে ঝুম বৃষ্টি। তখন তরিঘরি করে ধারে কাছেও শেল্টার পাওয়া যাবে না। মাঝখান থেকে বৃষ্টিতে ভিজে সারাদিনের শ্রমটাই মাটি হয়ে যাবে।
– চট্ জলদি রং তুলি, ইজেল গুছিয়ে নাও, বৃষ্টি এলো বলে।
– হুম তাই তো মনে হচ্ছে। আমরা এখন কোথায় যাব?
– বেটার উই লিভ এজ সুন্ এজ পসিবল্। মনে হয় বৃষ্টি আসার আগেই আমরা আমার এপার্টমেন্টে পৌঁছে যেতে পারবো।
– তাই যেন হয়। এ সময়টাতে বৃষ্টিতে ভিজলে নির্ঘাত জ্বর।
– বাসায় পৌঁছে খিচুড়ি চাপিয়ে দেবো দাথে ডিম ভাজি কেমন হবে বল?
– অসম্! ইটস্ এ গুড কম্বিনেশন।
কিছুক্ষণ বাদেই মুশুলধারে বৃষ্টি পড়া শুরু হোয়ে গেল। ভাগ্য ভালো এরই মধ্যে এরা পৌঁছে গেছে সৃজিতের এপার্টমেন্টে। সৃজিত ঘরে ঢুকেই চাল-ডাল ধুয়ে যা যা মশল্লা দেয়া প্রয়োজন সবকিছু একসাথে মেখে চুলোয় বসিয়ে দিয়ে সুজানকে একটু দেখতে বলে শাওয়ার নিতে চলে গেল। সুজান ঘুরেফিরে দেখছিল তার এলোমেলো ঘরের অবস্থা। মেঝেতে পড়ে থাকা রং এর টিউব, ব্রাশ, ক্যানভাস, ইজেল, স্কেচ্, হাফ ডান কিছু পোট্রট ও ল্যান্ডস্কেপ। একটা ইজেলে আলাদা আলাদা কয়েকটি মেয়ের আবক্ষ ন্যুড স্কেচ্। কয়েকটিতে রং চড়াতে গিয়েও থমকে গিয়েছে মনে হলো।
সুজানের কিছুটা কৌতুহল জাগলো বিষয়টি জানার। ওয়াশরুম থেকে বের হতেই সৃজিতকে বললো
– কতোগুলো আবক্ষ ন্যুড ললনার আন ফিনিশড আর্টওয়ার্ক দেখলাম, কোনটাই শেষ করা হয় নাই!
– সবগুলোই আমার কল্পনা থেকেই আঁকা, কোন মডেল ইয়ুজ করিনি। যার দরুন ছবিগুলো মানসম্মত হবে বলে মনে হয়নি আমার কাছে। উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছি।
– কেন তেমন কোন মডেল চোখে পড়েনি তোমার? ঠিক আছে দেখি কাউকে খুঁজে পাই কিনা।
– দেখ, আমি উপকৃত হবো। তুমি কি ফ্রেশ হোয়ে নেবে একটু?
– আসলে শাওয়ার নিতে পারলেই ভাল হতো এবং আমার ট্রাউজারটায় তখন কফি পড়েছিল ধুয়ে দিতে পারলে ভাল হয়। কিন্তু, আমার ব্যাগে এক্সট্রা কোন কাপড় নেই।
– নো অরিস্, আমার ট্রাউজার তোমার হবে না কিন্তু কিছু শর্টস আছে ছোট – বড়, হয়তো একটা তোমার হোয়ে যেতে পারে। আর,কয়েকটি টি আছে দেখতে পার তোমার ফিট হয় কিনা?
এর থেকে বেছে কয়েকটি নিয়ে সুজান ওয়াশরুমে ঢুকে গেল। সৃজিত এরই মধ্যে খিচুড়ি রান্না শেষ করে ডিম ভেজে সাথে সালাদ বানিয়ে সুজানের জন্য অপেক্ষা করতে থাকলো। সুজান বের হতেই সৃজিত ওর দিকে অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে বলতে লাগলো –
– এ যে দেখছি সাক্ষাৎ টিন টিনা!
– মানে বুঝতে পারলাম না।
– মানে তুমি একেবারে টিনএজ টিনা হয়ে গেছো দেখছি।
– কেমন করে?
– শর্টস আর টি’তে তাইতো মনে হচ্ছে। নাউ ইউ আর লুকিং সো স্মার্ট এন্ড প্রিটি।
– রিয়েলি, থ্যাংক ইউ।
– লেট আস হ্যাভ আওয়ার ফুড।
– ওওও ফেবুলাস ফুড স্টাফ।
– ওয়ান থিং, হাউ ক্যান আই গেট এ টিনএজ মডেল?
– এম আই নট আপ টু দ্যাট মার্ক?
– আর ইউ কিডিং?
– নো স্যার, আই লাভ টু ডু দিস জব ইফ ইউ গিভ মি দ্যা চাঞ্চ।
– সিউর, আই উড বি রেদার হ্যাপি ইফ ইউ ডু….
– ডে আফটার টুমরো নো ক্লাসেস, ইজ ইট ও কে ফর ইউ?
– ইয়েস, নেক্সট টু ডে’স আই হ্যাভ নো ওয়ার্ক। সো উই ক্যান।
সকালে উঠেই ঘরটা একটু গুছিয়ে নিল সৃজিত। ফ্রাইড রাইছ, চিকেন আর কর্নস্যুপ রেডি করতে করতে সুজান এসে হাজির। সেও সৃজিতের সাথে কাজে হাত মিলালো। রান্না শেষ হলে সৃজিত একটা ইজেল টেনে নিল এবং সুজানকে বললো পাশের হাতল বিহীন চেয়ারেটিতে বসতে। সুজান আগের দিনের অরিয়েন্টেশন অনুযায়ী সেভাবে বসে আস্তে আস্তে তার শার্টের বুতাম আন-বাটন করে নিল। সৃজিত কাছে এসে সুজানের পরা সার্ট ঘার থেকে আরও কিছুটা নামিয়ে দিল। এতে করে তার একটি বক্ষ প্রায় সম্পূর্ণ উন্মুক্ত দেখাচ্ছিল। সুজান তাতে অতটা বিচলিত হয়নি। সৃজিতের চোখে চোখ পড়তেই একটু মুচকি হেসে উঠলো হয়তো। সুজান এর আগে শুধু একবারই এক টিচারের মডেল হয়েছিল কিন্তু এতোটা উন্মুক্ত হতে হয়নি সেবার তাকে।
সৃজিত ক্যানভাসের উপর পেন্সিল দিয়ে প্রাথমিক স্কেচ করছিল এবং তার পজিশন পরখ করছিল। কিছুক্ষণ পর সুজানকে বললো তার প্যান্টের জিপারটা নিচের দিকে টেনে নামাতে যাতে করে তার নাভি দেখা যায়। সুজান উঠে এসে জিপার আরো কিছুটা টেনে নামালো এবং সার্টও বুক থেকে আরো কিছুটা সরিয়ে দিল। সৃজিতের হাতের শীতল স্পর্শে এবার একটু উষ্ণ শিহরন অনুভব করলো সুজান। প্রায় এক ঘন্টার উপর সৃজিত সুজানের স্কেচ আঁকলো। এবার কিছুক্ষণের ব্রেক নিয়ে দুপুরের লাঞ্চ সেরে নিল। একটু পড়ে সৃজিত দু’হাতে গরম দু’মাগ কফি নিয়ে হাজির।
– মনে মনে কফির কথাই ভাবছিলাম, আর অমনি তুমি নিয়ে এলে।
– আমিতো তোমাকে রিড করতে পারি, তোমার মনের কথা বুঝতে পারি।
– হয়তো পার কিন্তু, তাই বলে সবটুকু নয়।
– ও কে, পড়ে বুঝা যাবে। এখন আবার শুরু করা যাক, কাল না হয় বাকি কাজটা সেরে ফেলবো – তুমি কি বল?
– ঠিক আছে। একই পোজ নেবো তো?
– ইচ্ছে করলে অন্য একভাবে দেখা যেতে পারে যদি তোমার অসুবিধে না হয়।
– অসুবিধে কিসের সময়তো আছে হাতে, কয়েকভাবে ট্রাই করে দেখা যাক না।
– মন্দ হয় না, ভবিষ্যতে শুধু তোমার ছবি দিয়েই না হয় একটি প্রদর্শনী করে ফেলবো।
– গ্রেট আইডিয়া।
– এবার না হয় সার্টটা খুলে রাখ পাশে। তুমি প্রিটেন্ট করবে ওটা জাস্ট পিক করতে যাচ্ছ। দেখা যাক পোজটা কেমন হয়।
– ইয়েস, গুড আইডিয়া, মোস্ট ইনোভেটিভ।
বলার সাথে সাথেই সুজান তার সার্টটা একটানে খুলে ফেললো এবং পাশে রেখে দিল। সৃজিত কিছুটা অবাকই হলো সুজানের সব কিছু এতোটা ইজি ভাবে নেয়ার জন্য।
– ইউ আর সো প্রিটি এন্ড বিউটিফুল আই কান্ট বিলিভ ইন মাই অওন আইস। সত্যিই তুমি অপরূপ।
বেশ মনযোগ দিয়ে সুজানকে নিয়ে স্কেচ আঁকা শেষ করলো।আগামী দিন আবার নতুন আঙ্গিকে, অন্য মুদ্রায় বা ভংগিমায় সুজানের স্কেচ করা হবে। সৃজিত সুজানের সার্ট এগিয়ে দিতে দিতে একটি বাক্য উচ্চারণ করলো ভীষণ মমত্ব নিয়ে “ইউ আর রিয়েলি ইউনিক এন্ড সো মাচ ডিভোটেড টু ইউর জব।দিজ শুড বি এপ্রিশিয়েটেড আন ডাউটেডলি।” এসব কিছু বলে সুজানকে বুকের কাছে টেনে সজোরে জড়িয়ে ধরে আলতো করে তার দু’ঠোটে চুমু একে দিল সৃজিত। বাসা থেকে বাইরে এসে উবারের জন্য অপেক্ষা করছিল দু’জন। কিছুক্ষণের মধ্যে উবার এসে গেলে সুজান সৃজিতকে বিগ হাগ দিয়ে গাড়িতে উঠে গেল। হাত নেড়ে বিদায় জানাতে জানাতে সৃজিত বললো ‘সি ইয়্যু টুমরো বেবি, টেক কেয়ার’।