অনলাইন ডেস্ক : করোনা ভাইরাস মহামারিতে ইউরোপের মধ্যে প্রাণহানীর সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বৃটেন। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় রোগ সম্পর্কিত তথ্য বিশ্লেষকরা অনুমান করেছেন, ইউরোপের মধ্যে করোনাভাইরাস মহামারিতে বৃটেনই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হয়ে উঠতে পারে। ইউরোপজুড়ে মোট মৃত্যুর ৪০ ভাগ এখানেই ঘটতে পারে। সিয়াটলের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভালুয়েশন (আইএইচএমই) তাদের বিশ্লেষণাত্মক পূর্বাভাসে বলেছেন আগস্টের মধ্যে কোভিড-১৯ মহামারিতে বৃটেনে মৃত্যুবরণ করতে পারে ৬৬ হাজারের বেশি মানুষ। রোগের বিস্তার রোধে বৃটেন কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপের দিকে পর্যালোচনা করে ইনস্টিটিউট বলেছে এখানে দৈনিক মৃতের সংখ্যা ১৭ এপ্রিল শিখরে পৌঁছবে। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে মৃত্যুর হার যখন চূড়ায় পৌঁছবে তখন দৈনিক ২,৯৩২ জনের মৃত্যু হবে বৃটেনে। আইএইচএমই তথ্যের ভিত্তিতে এ ব্যাপারে সংবাদ প্রকাশ করেছে গার্ডিয়ান, দ্য সান ও মেট্রোসহ অনেক সংবাদপত্র।

বিশ্লেষকরা দাবি করেছেন যুক্তরাজ্যে করোনার আক্রমণ রোধে শারীরিক দূরত্ব রক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণে বিলম্ব হয়েছিল। ইংল্যান্ডে যখন এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তখন দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৫৪ জন।

অন্যদিকে পর্তুগাল কেবল একজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরই সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি জোরদার করেছিল। আইএইচএমই পূর্বাভাসে বলা হয়েছে ৪ আগস্টের মধ্যে যুক্তরাজ্যে প্রায় ৬৬,৩১৪ জন মৃত্যুর মুখোমুখি হবে।‘তবে এই আশঙ্কাকে বাস্তবতার দ্বিগুন বলে মন্তব্য করেছেন লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের প্রফেসর নিল ফার্গুসন। তিনি বলেছেন, এ মডেলটি বর্তমান যুক্তরাজ্যের পরিস্থিতির সাথে মেলে না। ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল লকডাউন কৌশলের মাধ্যমে মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে ২০ হাজারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে।

আইএইচএমই বলছে, এই মুহূর্তে দেশে হাসপাতালের ১ লাখের বেশি শয্যা লাগবে। বর্তমানে রয়েছে ১৮ হাজার এবং ঘাটতি রয়েছে ৮৫ হাজার। বৃটেনে যখন প্রাণহানির সংখ্যা চূঁড়ায় পৌছবে তখন প্রয়োজন হবে ২৪,৫০০ ইনটেনসিভ কেয়ার শয্যার। বর্তমানে সংখ্যাটি মাত্র ৭৯৯। ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন হবে প্রায় ২১ হাজার। বৃটেনে সম্ভাব্য মোট মৃতের সংখ্যা ৬৬ হাজারের বেশি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিলেও তাদের বিবেচনায় স্পেন, ইতালী ও ফ্রান্সে এই সংখ্যা হতে পারে যথাক্রমে ১৯ হাজার, ২০হাজার ও ১৫ হাজার। তিনটি দেশই যুক্তরাজ্যের চেয়ে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে লকডাউন ব্যবস্থা। আইএইচএমই বলছে, ইতালি ও স্পেন দুই দেশই তাদের দৈনিক মৃত্যুর শিখর পেরিয়ে গেছে। অন্যদিকে আমেরিকায় তারা সম্ভাব্য ৮১ হাজারের মৃত্যুর পূর্বাভাস দিয়েছে।