স্পোর্টস ডেস্ক : কাজের কাজ আগেই করে রেখেছিলেন দলের পেসাররা। ব্যাট হাতে ফিফটি ইনিংসে বাকিটা অনায়াসে সারলেন পাথুম নিশানকা ও সাদিরা সামারাবিক্রমা। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে গুড়িয়ে এবারের বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিল শ্রীলঙ্কা।
আসরের ২৫তম ম্যাচে বৃহস্পতিবার লঙ্কানরা জিতেছে ৮ উইকেটে। ইংলিশদের দেওয়া ১৫৬ রানের লক্ষ্য ২৫.৪ ওভারেই পূরণ করে ১৯৯৬ আসরের চ্যাম্পিয়নরা।
আসরে ইংল্যান্ডের টানা তৃতীয় ও সব মিলিয়ে ৫ ম্যাচে চতুর্থ হার এটি। ফলে শিরোপা ধরে রাখার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে তাদের। বিপরীতে টানা তিন হার দিয়ে আসর শুরু করা শ্রীলঙ্কা টানা জয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াল।
৫ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে তারা উঠে এসেছে পঞ্চম স্থানে। দশ দলের তালিকায় নয়ে ইংল্যান্ড।
ব্যাঙ্গালোরে স্রেফ ৩৩.২ ওভারে ১৫৬ রানেই শেষ হয় ইংল্যান্ডের ইনিংস। বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এটিই ইংল্যান্ডের সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ।
এ নিয়ে টুর্নামেন্টে পাঁচ ম্যাচে দ্বিতীয়বার দুইশর আগেই অলআউট হলো বাটলারের দল। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে এই সংস্করণের সর্বনিম্ন রানও এটি। ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৬৮ রানে অলআউট হয়েছিল স্বাগতিক ভারত।
ইংলিশদের অল্পেই থামানোর পথে ৩ উইকেট নেন লাহিরু কুমারা। এবারের আসরে প্রথম খেলতে নেমে ২ শিকার করেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। আরেক পেসার কাসুন রাজিথাও নেন ২ উইকেট। ইংল্যান্ডের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৪৩ রান আসে বেন স্টোকসের ব্যাট থেকে।
আর বিজয়ী দলের হয়ে ৮৩ বলে ৭টি চার ও ২ ছক্কায় ৭৭ রানে অপরাজিত থাকেন ওপেনার নিশানকা। ৫৪ বলে ৭টি চার ও ১ ছক্কায় অপরাজিত ৬৫ রান করেন সামারাবিক্রমা।
২৩ রানের মধ্যে দুই উইকেট তুলে নিয়ে লড়াইয়ের আভাস দিয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু বল হাতে তাদের লড়াইয়ের যবনিকা টেনে দেন নিশানকা ও সামারাবিক্রমা। তৃতীয় উইকেটে ১২২ বলে অবিচ্ছিন্ন ১৩৭ রানের জুটি গড়েন তারা।
এর আগে টস জিতে ব্যাট হাতেও ইংলিশদের শুরুটা ছিল উড়ন্ত। ৬ ওভারেই তারা স্কোরবোর্ডে জমা করে বিনা উইকেটে ৪৪ রান। এরপর তাদের মাটিতে নামান লঙ্কান পেসাররা। প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন দলে ফেরা ম্যাথিউস। ২৫ বলে ২৮ রান করে কট বিহাইন্ড হয়ে যান দাভিদ মালান।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে ইংল্যান্ড। বিনা উইকেটে ৪৫ থেকে ৩০ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারায় তারা।
ষষ্ঠ উইকেটে মইন আলিকে নিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন স্টোকস। মইনকে ফিরিয়ে ৩৭ রানের এই জুটিও ভাঙেন ৪৪ মাস পর বোলিংয়ে ফেরা ম্যাথিউস।
৮.২ ওভারে স্রেফ ২১ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন মাহিশ থিকশানা।
বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে মুখোমুখি লড়াইয়ে এ নিয়ে ১২ ম্যাচে দুই দলেরই জয় হয়ে গেল ছয়টি করে।
পরের ম্যাচে আরও কঠিন প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড। আগামী রোববার স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে খেলতে বাটলারের দল। পরের দিন শ্রীলঙ্কার প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড: ৩৩.২ ওভারে ১৫৬ (বেয়ারস্টো ৩০, মালান ২৮, রুট ৩, স্টোকস ৪৩, বাটলার ৮, লিভিংস্টোন ১, মইন ১৫, ওকস ০, উইলি ১৪*, রশিদ ২, উড ৫; অতিরিক্ত ৭; মাদুশানকা ৫-০-৩৭-০, রাজিথা ৭-০-৩৬-২, থিকশানা ৮.২-১-২১-১, ম্যাথিউস ৫-১-১৪-২, কুমারা ৭-০-৩৫-৩, ধরাঞ্জয়া ১-০-১০-০)।
শ্রীলঙ্কা: ২৫.৪ ওভারে ১৬০/২ (নিশানকা ৭৭*, পেরেরা ৪, মেন্ডিস ১১, সামারাবিক্রমা ৬৫*; অতিরিক্ত ৩; ওকস ৬-০-৩০-০, উইলি ৫-০-৩০-২, রশিদ ৪.৪-০-৩৯-০, উড ৪-০-২৩-০, লিভিংস্টোন ৩-০-১৭-০, মইন ৩-০-২১-০)।
ফল: শ্রীলঙ্কা ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: লাহিরু কুমারা।