রাশিদুল হাসান : কানাডা তার ক্রমবর্ধমান আবাসন সংকট মোকাবেলায় স্টুডেন্ট ভিসার উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করার কথা বিবেচনা করছে। গত ২১ আগস্ট, সোমবার নতুন আবাসন মন্ত্রী শন ফ্রেজার বলেছেন, কানাডিয়ান সরকার আবাসনের ক্রমবর্ধমান ব্যয় নিয়ে চাপের মধ্যে রয়েছে; সা¤প্রতিক বছরগুলোতে বিদেশী শিক্ষার্থীদের প্রচুর ভিসা দেওয়া হয়েছে যা কমিয়ে আনার বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে। আবাসনমন্ত্রী কানাডার আটলান্টিক উপকুলীয় প্রদেশ প্রিন্স অ্যাডওয়ার্ড আইল্যান্ডে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশের শিক্ষার্থী ও অভিবাসন প্রত্যাশীদের কাছে অন্যতম শীর্ষ পছন্দের দেশ কানাডা। ভালো বিশ্ববিদ্যালয় আর পড়াশোনার ফাঁকে কাজের সুযোগের কারণে দেশটিতে শিক্ষার্থীরা পাড়ি জমান। আসছে দিনগুলোতে সেই সুযোগ কমতে যাচ্ছে। কারণ, বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা দেওয়া কমানোর পরিকল্পনা করছে জাস্টিন ট্রুডোর সরকার। ইনকিউরার ডটনেট ও ইমিগ্রেশন ডট সিএ-এর খবরে এ কথা বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর শিক্ষার্থী ও অভিবাসনপ্রত্যাশীদের কাছে শীর্ষ পছন্দের দেশ কানাডা। দেশটির সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে কানাডায় ভিসাধারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৮ লাখের বেশি। ১০ বছর আগে, ২০১২ সালে এ সংখ্যা ছিল মাত্র ২ লাখ ৭৫ হাজার। কানাডা আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য জনপ্রিয় গন্তব্যের একটি হওয়ার অন্যতম কারণ হলো ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া তুলনামূলক সহজ। গত ১০ বছরে দেশটিতে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৪ গুণ।
বাড়তি শিক্ষার্থীর কারণে কানাডার আবাসন বাজারে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে এবং বাড়িঘর ও রিয়েল এস্টেটের দাম দিন দিন বাড়ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান মন্ত্রী। সরকার ভিসা বিধিনিষেধের মাধ্যমে বিদেশি শিক্ষার্থীদের কানাডায় আসা কমিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে কি না, সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী সিন ফ্রেসার বলেন, ‘আমার মনে হয়, এ ধরনের পরিকল্পনা নেওয়া উচিত, আর এখনই উপযুক্ত সময়।’ তবে তিনি বলেন, তবে সরকার এখনও এ ব্যাপারে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। আবাসনমন্ত্রী সিন ফ্রেসার বলেন, ‘বিদেশি শিক্ষার্থী বৃদ্ধির সংখ্যাকে নিয়ন্ত্রণ করতে অবশ্যই এমন কিছু পরিকল্পনা আমাদের নেওয়া প্রয়োজন, যা আগে কখনো নেওয়া হয়নি।’
কানাডায় বর্তমানে ক্ষমতায় আছে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর নেতৃত্বাধীন লিবারেল পার্টির সরকার। ২০২৫ সালের অক্টোবরে দেশটিতে পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি অভিযোগ করে আসছে, অভিবাসীদের আগমন নিয়ন্ত্রণে ট্রুডোর সরকার কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।