অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর বেইলি রোডে সাততলা একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় অন্তত ২২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে ভবনটিতে আগুন লাগে। আগুন নেভানোর পর হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক) এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়।
ভবনের দ্বিতীয় তলায় ‘কাচ্চি ভাই’ নামের খাবারের দোকান রয়েছে। তৃতীয় তলায় একটি পোশাকের দোকান ছাড়া ওপরের তলাগুলোতেও রয়েছে খাবারের দোকান। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে খাবারের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় হয়। অনেকেই পরিবার নিয়ে সেখানে খেতে যান।
বেইলি রোড শাখার কাচ্চি ভাইর ম্যানেজার বলেন, ‘আমি যখন রাত ৯টা ৫০ বাজে, তখন আমি দ্বিতীয় তলা থেকে গ্লাসের ফাঁক দিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখি ধোঁয়া বের হচ্ছে। তখন আমি আগুনের ভেতর দিয়ে নিচে বের হইছি। তারপর সবাইকে সতর্ক করে বলি বিল্ডিংয়ে আগুন লাগছে। সবাই নিচে নেমে আসুন। তার পর আমার স্টাফদের বলছি এক্সটিংগুইশার নিচে ফালাও। আমি নিজে এক্সটিংগুইশার দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছি। আসলে যে আগুন লেগেছে তা এক্সটিংগুইশার দিয়ে নেভানো সম্ভব হয় নাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওইখানে চুম্বকের কিচেন ছিল। আমি বের হয়ে দেখি ওই চুম্বকের পুরোটাই আগুন বের হচ্ছে। তারপর ফায়ার ব্রিগেড আসছে। তখন আমি আগুনের ভেতর দিয়ে বের হয়েছি।’
ম্যানেজার বলেন, ‘আগুনের সূত্রপাত কোথা থেকে হয়েছে তা আমি বলতে পারব না। কারণ আমি দোতলা থেকে আগুন দেখে নিচে আসছি। আমার দুজন স্টাফ মারা গেছেন। একজনের নাম কামরুল হাসান রকি, তিনি কাচ্চি ভাইর ক্যাশিয়ার। আরেকজন হলো জিহাদ, সে হলো সার্ভিসম্যান। আমি যখন সবাইকে ডাকি তখন সবাই ভয়ে ওপরে ওঠে যায়।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভবনটি প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় আগুন লাগার পর তা ওপরের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পাশাপাশি ক্রেনের সাহায্যে ভবনের সপ্তম তলা ও ছাদে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিদের নামিয়ে আনতে থাকেন তারা। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।