অনলাইন ডেস্ক : আগাম নির্বাচন ডাকতে পারেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এমন গুঞ্জনে সরব বৃটিশ গণমাধ্যম। বলা হচ্ছে, আসন্ন দিনগুলোতে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট ঠেকাতে বিল পাসের প্রস্তাব তুলবে বিরোধী দলগুলো। বিরোধীদের সঙ্গে মিলে পরিকল্পিত ওই বিলের পক্ষে ভোট দিতে পারে জনসনের ক্ষমতাসীন দল কনজার্ভেটিভ পার্টির কয়েক ডজন সদস্য। ওই ভোটদানকে সরকারের প্রতি ক্ষমতাসীন দলের সাংসদদের ‘আস্থার বহিপ্রকাশ’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে বলে গার্ডিয়ানকে জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এক সূত্র। বিলের পক্ষে সম্ভাব্য ভোটদানকারী বিদ্রোহী সরকারি সাংসদদের আগ থেকেই বহিষ্কারের হুমকি দিয়েছে জনসন প্রশাসন। এর মধ্যে সোমবার মন্ত্রিপরিষদের জরুরি বৈঠকও ডেকেছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী। সরকারের সকল পদক্ষেপ বিবেচনায় আগাম নির্বাচন ডাকার গুঞ্জন জোরদার হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার বিকেলে মন্ত্রীদের জরুরি বৈঠকের জন্য তলব করা হয়েছে।
বৈঠক শেষে কনজারভেটিভ সাংসদদের প্রতি বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী জনসন। সরকারদলীয় বিদ্রোহী সাংসদদের বরাত দিয়ে গার্ডিয়ান বলেছে, জ্যেষ্ঠ বিদ্রোহী নেতাদের বিশ্বাস যে, জনসন বুধবারের মধ্যে আগাম নির্বাচনের ডাক দেবেন। পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের উদ্দেশ্যে এই নির্বাচন ডাকবেন তিনি। ব্রেক্সিট কার্যকরের শেষ সময়সীমা ৩১ অক্টোবরের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ধারণা করছেন তারা। এদিকে, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় নিশ্চিত করেছে যে, সাংসদদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখার আগে মন্ত্রীদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসবেন জনসন।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পাঁচ সপ্তাহের জন্য পার্লামেন্ট বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জনসন। ঘোষণাটি কার্যকর হলে আগামী সপ্তাহের মাঝখান থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত মুলতবি করা হবে পার্লামেন্টের সকল অধিবেশন। কোনো বিল পাস করতে পারবে না পার্লামেন্ট। বিরোধীদের অভিযোগ, চুক্তিহীন ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন করতেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এতে পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট নিয়ে আলোচনা ও বিল পাসের পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যাবে না। এমতাবস্থায় পার্লামেন্ট বন্ধ হওয়ার আগ দিয়েই চুক্তিহীন ব্রেক্সিট ঠেকাতে বিল পাসের পরিকল্পনা করছে লেবার পার্টি নেতৃত্বাধীন বিরোধীদলীয় জোট। এক্ষেত্রে কয়েক ডজন সরকারি সাংসদ বিরোধী দলগুলোকে সমর্থন দিচ্ছেন বলে দাবি ওঠেছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ক্ষমতাসীন দলের কোনো সাংসদ যদি সরকারের বিরুদ্ধে বিল পাসে ভোট দেয় তাহলে তাদের বহিষ্কার করা হবে।
সূত্রের বরাত দিয়ে গার্ডিয়ান জানিয়েছে, মঙ্গলবার যদি ভোট হয় তাহলে তা সরকারের প্রতি আস্থার বহিপ্রকাশ হিসেবে দেখা হবে। ব্রেক্সিট ইসুত্যে সরকারের আলোচনার ও চুক্তি নিশ্চিত করার সক্ষমতার প্রতি আস্থার বহিপ্রকাশ হিসেবে দেখা হবে। ধারণা করা হচ্ছে, কনজারভেটিভ ব্যাকবেঞ্চার ডমিনিক গ্রিয়েভ, অলিভার লেটওয়িন, ফিলিপ হ্যামন্ড ও ড্যাভিড গওকের নেতৃত্বে বিদ্রোহী সাংসদদের একটি দল পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা চালাবে। তারা ব্রেক্সিট কার্যকর হওয়ার সময়সীমা পাসের পক্ষে একটি বিল পাস করার চেষ্টা করতে পারে।