অনলাইন ডেস্ক : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনার মধ্য দিয়েই গড়ে তুলতে হবে এদেশের সমৃদ্ধির সোপান।
মঙ্গলবার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্মাষ্টমী পালন উপলক্ষে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নে যেমনি প্রয়োজন অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা, তেমনি প্রয়োজন প্রতিবেশী দেশের সাথে সুসম্পর্ক। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে কোনো দেশই প্রতিবেশি দেশের সাথে খারাপ সম্পর্ক রেখে এগুতে পারে না। শেখ হাসিনা সরকার ও ভারতের নরেন্দ্র মোদী সরকারের সম্পর্ক সময়ের পরীক্ষিত উত্তীর্ণ।
দুদেশের সম্পর্ক একাত্তরের রক্তের রাখিবন্ধনে আবদ্ধ বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।
সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশি দেশের সাথে ভালো বোঝাপড়া থাকলে অনেক অমীমাংসিত ইস্যু সহজেই সমাধান সম্ভব। যার প্রমাণ বাংলাদেশ ও ভারত। দীর্ঘ দিনের সীমান্ত সমস্যা শান্তিপূর্ণভাবে ছিটমহল বিনিময় সমাধান দুদেশের পারস্পরিক আস্থাকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সমুদ্র জয়ের মামলায় ভারত আপিল না করে বন্ধুসুলভ যে আচরণ করেছে তা সম্পর্কের সূত্রকে করেছে আরও সুদৃঢ়। দুদেশের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাসের যে সেতুবন্ধন তৈরি হয়েছে তার মাধ্যমে তিস্তা সমস্যা ও অন্যান্য নদীর পানি বন্টনের আলোচনায় ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে।
দেশের নাগরিক হিসেবে সকলের সমান সুযোগ এবং অধিকার রয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনারা নিজেদের মাইনরিটি ভাববেন না, তা না হলে আপনারা মানসিক ভাবে পিছিয়ে থাকবেন। নাগরিক হিসেবে একজন মুসলমানের রাষ্ট্রের প্রতি যে অধিকার আছে, আপনাদেরও সমান অধিকার আছে। মাঝে মধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে একটি অশুভ চক্র ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এই দেশের হাজার বছরের ঐতিহ্যে আঘাত হানার অপচেষ্টা করে।
শেখ হাসিনা সরকার যতদিন আছেন আপনাদের কোনো ভয় নেই।’
তিনি বলেন, আমাদের এগিয়ে যাওয়ার মূলমন্ত্র হচ্ছে সামাজিক সখ্য এবং ঐক্য, একতা ধরে রেখেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তনের পর হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কী অমানুষিক নির্যাতন নেমে এসেছিল তা নিশ্চয়ই মনে আছে? যে নির্যাতন একাত্তরের পাক হানাদারদের নির্যাতনকেও মনে করিয়ে দেয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের অপচেষ্টা এখনো চলছে, ইতিমধ্যেই তাদের বিষদাঁত ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
এদেশে যারা হত্যা- ষড়যন্ত্রের রাজনীতির সূচনা ও লালন করেছিল এবং সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষকে বড় করে তুলেছিল তারাই হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের জীবন ও সম্পদের ওপর বারবার আঘাত এনেছে।
উন্নয়ন, মানবিকতার আর সম্প্রীতির শত্রু সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিষবৃক্ষকে উপড়ে ফেলতে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করারও আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।