শুজা রশীদ : (পর্ব ১৭)
২৪.
সেপ্টেম্বরের শেষ হতে চলেছে। এবারের অসাধারণ রকমের গরম দিনগুলো ধীরে ধীরে অবশেষে শীতল হয়ে আসছে। দিন হয়ে পড়ছে ছোট। সুদীর্ঘ শীতের আগমনকে আলিঙ্গন করবার জন্য মনে মনে প্রস্তুতি নেবার সময় হয়ে আসছে। এখনও মাস দুই এক বাকী থাকলেও ঠান্ডার কথা ভাবলেই রিমার মনটা বিষন্নতায় ভরে যায়।
গত একটা সপ্তাহে তেমন কিছুই ঘটে নি। ভালোর মধ্যে একটা যে রাতে দরজায় টোকাটা আপাতত বন্ধ হয়েছে। তার কারণটা কি রিমার আগ্রাসন নাকি সাময়িক বিরতি বোঝা যাচ্ছে না। কালামের সাথে দোকানে দেখা হতে ওকে একপাশে টেনে নিয়ে গিয়ে ঘটনাটা খুলে বলেছে এবং তাকে দিয়ে প্রতিজ্ঞা করিয়ে নিয়েছে যে সে এই ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেবে না। এটা তার মাথা ব্যাথা নয়।
পিন্টু একেবারে চুপচাপ। রিমা বুঝতে পারছে না সেটা কি তার পিছিয়ে যাবার ইঙ্গিত নাকি আরোও বড় এবং প্রবল আক্রমনের আগে ক্ষনিকের ছমছমে নীরবতা। ভেতরে ভেতরে সে সর্বক্ষণ উদ্বিগ্ন থাকে।
নোমানের সাথে ঘটনাচক্রে দেখা হবার পর রাজ্যের যাবতীয় সমস্যার মধ্যেও তাকে মাথা থেকে তাড়াতে পারেনি রিমা। নোমান তাকে ফোন দেয়নি। রিমা অবশ্য খুব একটা আশাও করেনি। তার সাথে সে যা করেছিল তার পর সেটা আশা করা যায় না। যতই ব্যাপারটা নিয়ে ভাবছে ততই মনে হচ্ছে নোমানের কাছে তার ক্ষমা চাওয়া উচিত। মুখোমুখি দাঁড়িয়ে, সততার সাথে ক্ষমা চাওয়া দরকার। তাকে ফোন দেবে নাকি একটা টেক্সট পাঠাবে তাই নিয়ে একটু দ্বিধা দ্ব›েদ্বর মধ্যে ছিল। পরে টেক্সট করাটাই সিদ্ধান্ত নিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটাই বেশি সঙ্গত মনে হল। নোমান সময় নিয়ে কিছু একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। অতীতের সেই সব ঘটনার পর অনেকগুলো বছর পেরিয়ে গেছে। নোমান যদি তার সাথে বেশি ঘনিষ্ট হবার আগ্রহ না দেখায় ও খুব একটা আশ্চর্য হবে না।
ছোট, পরিচ্ছন্ন একটা মেসেজ পাঠাল ও।
নোমান ভাই, দেখা করলে কেমন হয়? একটু কথা বলতাম।
দুই দিন পর তার উত্তর এলো। রিমা জানত প্রত্যুত্তর দেবার আগে মানুষটা তার টেক্সটের অর্থ নিয়ে অনেক বিশ্লেষণ করবে। সেটাই তার বৈশিষ্ট।
কোথায় দেখা করতে চাও?
একটা যথার্থ স্থান খুঁজে পাবার দরকার ছিল ওর- বন্ধুত্বপূর্ণ, উজ্জ্বল হবে কিন্তু আবার খুব বেশি ভীড় ভাট্টা থাকবে না, যেন ওদের দুজনার মন খুলে কথা বলার সুযোগ থাকে। আবার একেবারে নিরালাও চায় না। মনে হতে পারে প্রেম করতে এসেছে।
স্টারবাকস?
কোনটা?
ভিক্টোরিয়া পার্ক এভেনিউ সাউথে একটা আছে। বাংলা টাউনের খুব কাছে কোথাও তার সাথে দেখা করতে চায় না ও। কেউ দেখে ফেললে অযথা গুজব ছড়িয়ে পড়তে পারে। ও তাকে ঠিকানাটা পাঠিয়ে দিল। ঠিক হল পরের বৃহস্পতিবার দুপরে দেখা করবে।
বৃহস্পতিবারে রিমা খুব চিন্তাভাবনা করে পরনের কাপড় বাছাই করল। মিন্টুর মৃত্যুর পর খুব সতর্কতার সাথে পোশাক আষাক পরে ও, যেন কেউ বলতে না পারে তাকে দেখে শোকতপ্ত বিধবা বলে মনে হয় না। যদিও স্বামী হারানোর দুঃখ যে কোন নারীর কাছে একান্ত ব্যাক্তিগত এক অনুভূতি, কিন্তু মাঝে মাঝে চারদিকের মানুষদের অভিমতের মূল্য দেবার প্রয়োজন আছে। সামান্য স্খলনও অযথা মানুষের নজর কাড়তে পারে, জন্ম দিতে পারে অহেতুক, অর্থহীন গুজবের। ইদানীং তার পোশাক হয়ে পড়েছে সাদামাটা, মলিন।
নোমানের সাথে দেখা করতে যাবার দিন কি পরবে তাই নিয়ে খুব দ্বিধা দ্ব›েদ্ব পড়ে গেল। সালোয়ের কামিজ পরবে নাকি এখানকার মেয়েদের মত প্যান্ট শার্ট পরবে? যদি দেখা করার পর কাজে ফিরতে না হত তাহলে হয়ত একটা সুতির শাড়ী পরে যেত, জানে নোমান শাড়ী কত পছন্দ করে। শেষ পর্যন্ত হালকা নীল রঙের একটা কামিজ আর সাদা একটা সালোয়ার পরল, লম্বা ধুসর একটা ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে নিল উর্ধাংগ। সব মিলিয়ে একেবারে দেশী পোশাক। আজকের এই বিশেষ সাক্ষাতের জন্য যুতসই।
কাজ থেকে বের হতে হতে বারোটা পনের হয়ে গেল। ঊবার নিয়ে কফি শপে যেতে আরও মিনিট দশেক গেল। দ্রæত হেঁটে ভেতরে ঢুকে চারদিকে নজর বোলাল। ভীড়টা এখনও খুব হালকা। লাঞ্চের জন্য ধীরে ধীরে মানুষ জমায়েত হচ্ছে। কাউন্টারের সামনে লাইনটা এখনও বেশ ছোটই। নোমানকে কোথাও দেখা গেল না। সময় দেখল। বারোটা পঁচিশ। বেশী দেরী হয়ে গেল? সে কি এসে ওকে না দেখে চলে গেল?
অনিশ্চিত, আরেকটু সময় অপেক্ষা করবার সিদ্ধান্ত নিল ও। নোমানের তো কোন কারণে দেরীও হতে পারে। দোকানের কাঁচ ঘেরা পাশটার কাছে একটা টেবিল নিয়ে বসল ও, বাইরের উজ্জ্বল রোদটা ওর শরীরে এসে পড়ছে, ভালোই লাগছে। আশা করছে নোমান ঠিকই আসবে।
আরোও মিনিট দশেক পরে যখন সিদ্ধান্ত নেবার চেষ্টা করছে নোমানকে একটা ফোন দেবে নাকি চলে যাবে ঠিক তখন কাঁচের ভারী দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকল নোমান, কয়েক পা ভেতরে এলো, চারদিকে খুঁজল, দেখল রিমাকে, তার সাথে চোখাচোখি হতে চাঁপা হাসিতে তার মুখটা উদ্ভাসিত হয়ে উঠল। ছোট ছোট পায়ে এগিয়ে এলো ওর দিকে। একটু ওজন বেড়েছে, লক্ষ্য করল রিমা, কিন্তু মানুষটাকে মানিয়েছে, দেখে আরেকটু বড় সড়, শক্তিশালী মনে হচ্ছে। ওর টেবিলের পাশে এসে দাঁড়াল সে।
“সরি, ভীষণ ট্রাফিকে পড়ে গিয়েছিলাম। মার্কহ্যাম থেকে আসছি তো।”
রিমা স্বস্তির হাসি হাসে। “মার্কহ্যাম? তুমি অতদূরে কাজ কর তাতো জানতাম না। আমরা আরেকটু উত্তরে কোথাও দেখা করতে পারতাম। মাঝামাঝি হত। বস না!”
“আগে কিছু খেলে কেমন হয়? আমার বেশ ক্ষুধা লেগেছে। তুমি কে খাবে বল।”
তার কথা বলার ভঙ্গীটা রিমার ভালো লাগল, কণ্ঠস্বর শান্ত হলেও দৃঢ়, তাড়া নেই, দ্বিধা নেই, যেন কি বলবে কিভাবে বলবে সেই ব্যাপারে সে সম্পূর্ণ নিশ্চিত। আত্মবিশ্বাষী! এ এক সম্পূর্ণ ভিন্ন নোমান।
“তেমন কিছু খেতে চাই নাৃএক কাপ কফি হলেই চলবেৃরেগুলারৃআমি দামটা দিয়ে দেই। আমিই তো তোমাকে আসতে বলেছি, না?” নিজের কানেই নিজের কথাবার্তা অসঙ্গত, খাপছাড়া শোনাল। তার সাথে যখন দেখা করবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তখন শুধু ভেবেছিল কি কথা তাকে বলবে, কিভাবে বলবে, কি খাবে না খাবে সেই চিন্তা তো মাথাতে আসেই নি।
নোমান হাসল, হাত উঁচিয়ে তাকে থামিয়ে দিল, তার পর কাঊণ্টারের দিকে হেঁটে চলে গেল। রিমার একটু নার্ভাস লাগছে। দশ বছর আগের সেই মানুষ আর এই মানুষ এক নয়। আজ কি সেই অবমাননাকর অতীতকে টেনে আনাটা ঠিক হবে? নোমান যদি তার মুখের উপর হেসে উঠে বলে সেই সব কথা তার আজ মনেও নেই?
নোমান অর্ডার দেবার লাইনে গিয়ে দড়িয়েছে, জনা পাঁচেকের পেছনে, দেয়ালে টাঙ্গানো বোর্ডে মেনু দেখছে মনযোগ দিয়ে। একবারের জন্যেও ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাল না সে। এটা কি তার সচেষ্ট প্রয়াস? রিমা ঠিক ধরতে পারল না।
২৫.
লোকটাকে প্রথম যেদিন লক্ষ্য করেছিল রিমা, তারপর থেকে যেখানে যায় সেখানেই তাকে দেখতে শুরু করল। কোন সন্দেহ নেই লাজুক নোমান তার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। রিমাকে ঘিরে সবখানেই তার বিচরণ। কখন ইউনিভার্সিটীতে যাবার পথে, কখন ইউনিভার্সিটী প্রাঙ্গণে, কখন বাসার সামনে, কখন উপরের বারান্দায়- যেদিকে তাকায় সেদিকেই নোমান। খুব শীঘ্রই অবশ্য ও বুঝতে পারল ব্যাপারটা ঘটছিল বেশ কিছুদিন ধরেই কিন্তু ও অন্যন্য বিষয়ে এতই মশগুল হয়ে ছিল যে লক্ষ্যই করেনি। তার দিনমান তখন কাটত সুদর্শণ, আকর্ষনীয় লাভলুর সঙ্গে কিংবা চিন্তা-চেতনায়। অন্য কারো প্রতি মনযোগ দেবার তার কোন আগ্রহ কিংবা অবসর ছিল না।
ওর ডিপার্টমেন্টের একটা মেয়ে পাশের বিল্ডিঙয়ে থাকত। তাকে জিজ্ঞেস করতে জানা গেল নোমান একটা বহুজাতিক কম্পানির সফটওয়ার প্রোগ্রামার। বছর খানেক আগে তার বাবা-মায়ের সাথে পাশের দালানে একটা এপার্টমেন্টে ভাড়াটে হিসাবে এসে উঠেছে। অবিবাহিত। মেয়েটি তাকে এটাও জানাল যেদিন থেকে নোমান এই বাসায় এসে উঠেছে সেদিন থেকেই রিমার উপর তার নজর। রিমা যদি সারাক্ষণ লাভলু-লাভলু যপ না করত তাহলে নিশ্চয় এতদিনে লক্ষ্য করত।
রিমা ঠিক বুঝতে পারছিল না সে খুশী হবে নাকি বিরক্ত হবে। তার অনুভূতিটা ঐ দুটি অনুভূতির মাঝামাঝি কোথাও স্থির হল। হাজার হোক লোকটা দেখতে শুনতে ভালো, শিক্ষিত, ভালো কাজ করে, তাকে দেখে নাক সিঁটকানোর মত নয়। কিন্তু একটা পরিণত বয়েসের পুরুষ যখন একজন তরুণীকে যত্রতত্র ছায়ার মত অনুসরণ করতে শুরু করে তখন সেই শ্রদ্ধাবোধটুকু উবে যেতে বেশি সময় লাগে না। কিন্তু রিমার প্রধান শঙ্কা ছিল কবে লাভলু তাকে দেখে ফেলবে এবং ধরে বেধড়ক পিটান দেবে। শারীরিক দিক দিয়ে লাভলু নোমানের চেয়ে অনেক বড়সড়, স্বাস্থ্যবান। দুজনার মধ্যে মারপিট হলে লাভলু চোখ বন্ধ করে জিতে যাবে। রিমা সাধ্যমত চেষ্টা করল লোকটাকে নিরস্ত করতে। তাকে দেখলেই সে চোখ ফিরিয়ে নেয়, না দেখার না চেনার ভান করে। ভাবল বুদ্ধিমান মানুষ, বুঝবে রিমার সাথে তার কোন ভবিষ্যত নেই। সময় থাকতে ফুটে যাও বাবা!
মাস দুয়েক পেরিয়ে গেল। অবস্থার কোন পরিবর্তন হল না। রিমার পিছু ছায়ার মতই লেগেই থাকল নোমান, কিন্তু আবার অতিরিক্ত লাজুক হওয়ায় সামনাসামনি কখন পড়ে গেলেও কথাবার্তা বলতে পারে না। রিমা তাতে আরোও তিক্ত হয়। অবশেষে লাভলু তাকে লক্ষ্য করতে শুরু করল। রিমা বুঝল এবার সরাসরি সতর্ক করবার সময় এসেছে। যথেষ্ট হয়েছে। রোমিও যদি তার মুখাবয়বের কোন পরিবর্তন না চায়, তাহলে এবার ভালোয় ভালোয় পিছিয়ে যাওয়াই উত্তম হবে।
সমস্যা হল, লোকটাকে সতর্ক করবার কোন ভালো সুযোগ পাচ্ছিল না। সবার সামনে রুঢ় কিছু বলতে চায়নি, অযথা তাকে অপমান করবার কোন প্রয়োজন দেখেনি। সবার আড়ালে ভালোভাবে তাকে বুঝিয়ে বলতে পারলে সমস্যাটা সুন্দরভাবে সমাধান হয়ে যাবে বলে আশা করছিল। ফোন করবে? টেক্সট করবে? একটা চিঠি লিখে পাঠাবে? কোনটাই পছন্দ হল না। দেখা যাবে লোকটা আরোও উত্সাহিত হয়ে পড়েছে। হিতে বিপরীত হবে। মেয়েটা শেষ পর্যন্ত যোগাযোগ যখন করছে নিশ্চয় সে আমাকে কিছুটা হলেও পছন্দ করে।
যে মেয়েটা নোমানদের দালানে থাকে তাকে দিয়েও খবর পাঠানো সম্ভব। মেয়েটার নাম রুবিনা। তার হাবভাবেই বোঝা যায় নোমানকে তার বেশ পছন্দ। তার সাথে সম্পর্ক স্থাপনে তার কোন আপত্তি নেই। বখাটে অকম্মা প্রেমকাতর তরুণদের সাথে প্রেম প্রেম খেলার চেয়ে বয়েসে একটু বড় হলেও প্রতিষ্ঠিত, সুদর্শন, ভদ্র একজন মানুষের সাথে গিট্টু বাধাই তো ভালো। রিমা বেশ খুশীই হয়ে গিয়েছিল। এক ঢিলে দুই পাখি মারার মত ব্যাপার। নোমান তার পিছু নেয়া ছেড়ে দিয়ে হয়ত রুবিনার সাথেই প্রেম করতে শুরু করবে। ঝামেলা চিরতরে চুকে যাবে।
দূর্ভাগ্যবশত, ঘটনা ঠিক সেভাবে ঘটল না। রুবিনা গিয়েছিল নোমানের অফিসে তার সাথে কথা বলতে। সেখানে তাদের মধ্যে ঠিক কি আলাপ হয়েছিল সেটা রিমা কখন জানতে পারেনি কিন্তু রুবিনা ফিরে এলো নোমানের কাছ থেক একটা প্রেম পত্র নিয়ে- পুরো দুই পৃষ্ঠা লম্বা। রুবিনা রিমার হাতে চিঠিটা তুলে দিয়ে বিষন্নমুখে জানিয়েছিল নোমান তার প্রেমে এতই হাবুডুবু খাচ্ছে যে অন্য কারো তার হৃদয়ে প্রবেশের কোন সুযোগ নেই। ভয়ানক হতাশ হয়েছিল রিমা। প্রেম পত্রটা অবশ্য চমত্কার ছিল- রুচিশীল মার্জিত শব্দচয়ন, প্রেম এবং আবেগের সুন্দর ভারসাম্য, রিমার প্রতি তার স্বর্গীয় ভালোবাসার মনকাড়া বর্ণনা এবং পরিশেষে তার বাবা-মায়ের কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাবার জন্য তার অনুমতি কামনা। সেই চিঠির কিছু কিছু অংশ তার আজও মনে আছে।
তুমি বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ছিলে, তাকিয়ে ছিলে দূরে দিগন্তের দিকে, অস্তগামী স্র্ুেযর কোমল রশ্মি মোলায়েম হাতে ছুঁয়ে দিচ্ছিল তোমাকে, তোমার এলোমেলো চুল নাচছিল চঞ্চল বাতাসে – সম্মোহিতের মত তোমাকে দেখছিলাম আমি। মাত্র এই নতুন বাসায় উঠেছি। কেন যেন মনে হয়েছিল এখানে এসে আমার জীবনটা পাল্টে যাবে। বলতে পারব না কেন। হঠাত দেখলাম তোমায়। এতো অপুর্ব সুন্দর কিছু আমি আর কখন দেখিনি।
সেই চিঠির উত্তর দেবার কোন প্রয়োজন ছিল না। রুবিনা নোমানকে জানিয়ে দিয়েছিল রিমার একজন বয়ফ্রেন্ড আছে এবং সে এতো অল্প বয়েসে বিয়ে করতে আগ্রহী নয়। নোমান তাকে বলেছিল রিমার সাথে লাভলুর প্রেম ক্ষনস্থায়ী ভাসমান এক সম্পর্ক। নোমানের সাথে তার হবে এক চিরস্থায়ী প্রেমময় সংযোগ। রিমা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়েছিল। বুঝেছিল ঐ লোকটার খুব শীঘ্রই টনক নড়বে। নিজের ইচ্ছে মত যে কোন একজন মেয়েকে বেছে নিয়ে, সর্বক্ষণ তার পিছু করে কেউ যদি ভাবে কেল্লা ফতে তাহলে তার একটা উচিত শিক্ষা হবার হয়ত প্রয়োজন আছে।