শুজা রশীদ : (পর্ব ২০)
দশ বছর লম্বা সময়। রিমার কাছে মনে হয় যেন এক জনম পেরিয়ে গেছে। এখন ভাবতেও অবাক লাগে, অদ্ভুত লাগে, যে মানুষগুলোর সাথে ওর কেটেছিল জীবনের এতোখানি ভালোবাসা এবং মধুর স্মৃতিময় সময়, কিভাবে তাদের সাথে কোন রকম সংযোগ ব্যতিরেকে এতোগুলো বছর কাটিয়ে দিতে পারল? ওর স্মৃতিতে তারা আজও সেই একই রকম রয়ে গেছে, তাদের বয়েস বাড়েনি এক ফোঁটাও। কিন্তু বাস্তবে ওর বাবা-মা এখন কেমন দেখতে হয়েছেন? তারা কি এখনও সেই একই বাসাতেই থাকেন? তারা কি ওর অভাব বোধ করেন? ওর মা এবং ভাই দু’জনারই ফেসবুক একাউন্ট আছে। ও যদি চাইত তাহলে খুব দ্রæত তার কিছু প্রশ্নের উত্তর পেতে পারত। কিন্তু ও ইচ্ছে করেই এই দূরত্ব বজায় রেখেছে। তাদেরকে শাস্তি দেবার এটাই ছিল ওর একমাত্র উপায়। কিন্তু সত্যটা হচ্ছে, এতে তাদের উপর কোন বিরূপ প্রভাব আদৌ পড়েছে কিনা ও জানে না। হতে পারে তারা খুব একটা গুরুত্বই দেয়নি। যদি দিত তাহলে নিশ্চয় তাকে খুঁজে পাবার চেষ্টা করত, যোগাযোগ করত। আজ অবধি এমন কোন ইংগিত ও পায়নি যে তারা তার খোঁজ করেছে। একটা ফোন কল করলেই যোগাযোগ হতে পারত কিন্তু করা হয়নি। গড়ে উঠেছে এক অসম্ভব দূরত্ব!
নোমানের সাথে দেখা করার পর ওর মধ্যে একটা অস্বাভাবিক পরিবর্তন এসেছে। এতোগুলো বছর ধরে তার মধ্যে নিজের অতীতের মুখোমুখি দাঁড়ানোর জন্য যে ভীতিবোধটা ছিল সেটা যেন হঠাৎ করেই উবে গেছে। ওকে শুধু নিজের থেকে উদ্যোগ নিয়ে সামনে পা বাড়িয়ে দিতে হবে, সেই ভীতিবোধটাকে পরাজিত করতে হবে। অতীতকে ভুলে গিয়ে নতুন করে শুরু করতে হবে। সবকিছুর মত রাগ এবং অভিমানেরও শেষ আছে। ওর স্বামীর অকস্মাৎ মৃত্যু, ওর নিজের অসুখ, নতুন করে জীবন শুরু করবার তাগিদ- সব মিলিয়ে ওর কাছে মনে হয়েছে এটাই প্রকৃত সময় সব কিছু ভুলে তার প্রিয়জনদের সাথে আবার নতুন করে সংযোগ স্থাপন করার। কিন্তু তারা কি ওর ডাকে সাড়া দেবে? তাদের সাথে যোগাযোগ না করে জানার কোন উপায় নেই। ফোনটা তুলে নিয়ে একটা কল করলেই সেই প্রশ্নের উত্তর মিলে যাবে।
ফোন নাম্বারগুলো ওর আজও মুখস্ত আছে। বাসার নাম্বার, বা-মা-ভাইয়ের মোবাইল নাম্বার। ওদের কি আজও একই নাম্বার আছে? জানার একটাই উপায়।
আরেকটা শারদীয় সন্ধ্যা ধীরে ধীরে কৃষ্ণতায় ঢেকে যায়। ফায়জা ক্লাশের পড়াশোনা শেষ করে আগের বেলার বেঁচে যাওয়া খাবারগুলো গরম করে টেবিলে সাজিয়ে দেয়। রিমা প্রতি দুই তিন দিন পরপর রান্না করে এবং সেটাই শেষ না হওয়া পর্যন্ত খাওয়া হয়। দুই ভাইকে খেতে ডাকে ফায়জা। তার কড়া দৃষ্টির সামনে বসে চুপচাপ খেয়ে নেয় দুজন। খাওয়া দাওয়া পর্ব চুকলে প্লেটগুলো হাতে ধুয়ে ডিশ ওয়াশারে শুকানোর জন্য রাখে ফায়জা। তারপর অল্প কিছুক্ষণ টেলিভিশন দেখার পর মাকে আলিঙ্গন করে শূভ রাত্রি জানিয়ে দুই ভাইকে সঙ্গে নিয়ে ঘুমাতে চলে যায়।
রাত সাড়ে দশটার মত বাজে এখন। ঢাকার সময় দশ ঘন্টা এগিয়ে। তার মানে সেখানে এখন সকাল সাড়ে আটটা। আজ অফিস আদালত খোলা। ওর বাবা খুব সকাল সকাল উঠতেন। মাঝে মাঝে পাড়ার কিছু বন্ধুদের সাথে কাছের এক পার্কে যেতেন হাঁটতে। ওর মা বরাবরই অনেক রাত পর্যন্ত টেলিভিশনে নাটক-সিনেমা দেখে খুব রাত করে ঘুমাতে যেতেন এবং সকালে উঠতেন দেরী করে। রনক ঘুমাতো দেরী করে, উঠতও দেরী করে। ও কি এখনও বাবা-মায়ের সাথে থাকে? দেশে অবশ্য প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়েদের বাবা-মায়ের সংসারে থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়, অনেকে বিয়ে করার পরও বউ-বাচ্চা নিয়েও থেকে যায়। ও কি বিয়ে করেছে এখনও? বাচ্চা কাচ্চা আছে? এতো বছরের নিঃশব্দ কৌতূহল হঠাৎ করে যেন সহস্র ছিদ্র পথে ফিনকি দিয়ে বেরিয়ে আসতে চাইছে। কত কিছু জানতে ইচ্ছে হচ্ছে ওর। কিন্তু ভয় হচ্ছে ওর পরিবারের কেউ হয়ত ওর সাথে কথা বলবে। এতো বছর ধরে যারা ওর সাথে যোগাযোগ করবার কোন চেষ্টাই করেনি হঠাৎ আজ কেন তারা ওর সাথে কথা বলতে চাইবে?
নিজের সাথে যুদ্ধ করে আরোও ঘন্টা দুই পার করে দেয় রিমা। শেষ পর্যন্ত সাহস করে ফোনটা হাতে তুলে নিয়ে বাসার নাম্বারে ফোন করে। কয়েকটা অস্থির মুহূর্তের পর ফোনটা বাজতে শুরু করে, ওর বুকের মধ্যে হৃৎপিন্ডটা ধ্বক ধ্বক করতে থাকে, কানের সাথে শক্ত করে চেপে ধরে থাকে ফোনের রিসিভারটা, মুখের ভেতরটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। খান পাঁচেক বাজার পর অন্য পাশ থেকে একটা পুরুষ কন্ঠ বলে ওঠে, “হ্যালো!”
ঐ কন্ঠস্বর ভোলার মত নয়। আগের চেয়ে গম্ভীর হয়েছে বয়েস বাড়ার সাথে সাথে কিন্তু একমাত্র ভাইয়ের গলা চিনতে কি ভুল হতে পারে? বার দুয়েকের চেষ্টার পর গলা দিয়ে শব্দ বের করতে পারল রিমা, তার কন্ঠস্বর চাঁপা উত্তেজনায় কেঁপে ওঠে।
“রনক!” নামটা বলেই থেমে যায় রিমা, যেন বুঝতে চায় অন্য পক্ষ থেকে কি ধরনের প্রতিক্রিয়া হয়। ও কি কথা বলবে? নাকি ফোন রেখে দেবে? একটা দীর্ঘ নীরবতা বিরাজ করে দু’জনার মাঝে।
“আপু! শেষ পর্যন্ত সেই নীরবতা ভেঙে যায় রনকের বিস্মিত ফিসফিসানিতে। “আপু, এটা কি তুমি?” এইবার তার কণ্ঠস্বর চড়ে, আগ্রহে, উত্তেজনায়। রিমার দু’ চোখ অশ্রæতে ভরে ওঠে। ঠোঁটের ডগায় আলতো করে ফুটে ওঠা হাসিটা ওর সারা মুখে ছড়িয়ে পড়ে।
“হ্যাঁ, আমি,” ফিসফিসিয়ে বলে ও।
“কেমন আছো?” রনক জানতে চায় আরেক দফা নীরবতার পর।
“ভালো। তুই? বাবা? মা?” গন্ড বেয়ে অঝোর ধারায় নেমে আসা নিঃশব্দ অশ্রুর সাথে তাল মিলিয়ে তার কন্ঠ ভেঙে যায়। ভেবেছিল আবেগ লুকিয়ে রাখবে কিন্তু এই মুহূর্তের চাহিদায় সেই সংকল্পের বাঁধ অনিমেষে ভেঙে যায়।
“দুই বছর আগে বাবার একটা হার্ট এটাক হয়েছিল। ভালো আছে এখন কিন্তু অনেক ঠান্ডা হয়ে গেছে। মা দারুন আছে। পাড়ার সব কাজের মেয়েরা এখনও তার জিকিরে দোস্ত। প্রত্যেকদিন সন্ধ্যার পর দল বেঁধে আমাদের লিভিংরুমে আড্ডা চলে। যে কান্ডকারখানা মিস করছ না!” রনক এমন ভাবে কথা বলছে যেন মাত্র আগের দিনেই দু’ জনার মধ্যে এক পশলা আলাপ হয়েছে।
রিমা হেসে ফেলে। মা তাহলে আগের মতই আছে। ভালো, তার সময়টা সুন্দরভাবেই কাটছে। “বাবা কি এখনও ওকালতি করছেন?”
“করবে না মানে? তুমি কি ভেবেছ আগের মত চীৎকার করে প্রতিপক্ষের সাক্ষীদেরকে নাস্তানাবুদ করতে পারছে না বলে পুরো প্রাক্টিসটাই ছেড়ে দেবে? মরবে কিন্তু ছাড়বে না। এখনও পুরো দমে লেগে আছে।”
রনকের কথা বলার ধরনটা রিমার ভালো লাগল। ব্যাঙ্গের মত শোনালেও তার মধ্যে রসিকতার ছোঁয়া আছে। অল্প বয়েসে রনক খুব একটা কথাবার্তা বলত না।
“আর তুই কেমন আছিস?” রিমা জানতে চায়। “বিয়ে করেছিস?”
“করতে তো চাই। পাশের বাড়ির সুন্দরী বউটা রাজি হলেই তাকে নিয়ে পালিয়ে গিয়ে করে ফেলব।” রনক হাসতে হাসতে বলে।
“কি বলছিস এসব?” রিমা বোঝার চেষ্টা করে তার মধ্যে কোন সত্যতা আছে কিনা।
“তুমি এখনও ঠাট্টা বোঝ না আপু,” রনক খোঁচা দিয়ে বলে। “বিয়ে ব্যাপারটা এখনও হয়ে ওঠেনি কিন্তু আমার একজন গার্ল ফ্রেন্ড আছে, অন্তত পক্ষে দুদিন আগে যখন তার সাথে শেষবার কথা হয়েছিল তখন পর্যন্ত ছিল। মাকে তার কথা বলেছি। মাস্টার্স প্রায় শেষ করে নিয়ে এসেছে। শেষ হলেই বিয়েটা আমারা সেরে ফেলব। আমার সমস্ত নাড়ী নক্ষত্রের খবর তোমার জানা হয়ে গেল। আর কিছু? এবার কি আমরা শুভ বিদায় বলে ফোন রেখে দেব? বছর দশেক পরে না হয় আরেক বার কল দিও।”
“আমাকে মিস করিসনি?” জিজ্ঞেস করতে গিয়ে রিমার গলা বুজে এলো। ভাইবোন বলতে তার এই একটা মাত্র ভাই। একটা সময় নিজের চেয়েও তাকে সে বেশি ভালোবাসত। ঠাট্টা মশকরার বাইরে ছেলেটার ভেতরে গভীর কোন অনুভূতি থাকবে না সেটা ভাবাই যায় না।
রনক একটা গভীর নিঃশ্বাস ছাড়ে। “হ্যাঁ আপু, তোমাকে অনেক মিস করেছি। অনেক।”
“এতোগুলো বছরে আমার সাথে তোর একবারও কথা বলতে ইচ্ছে হয়নি?”
“হয়েছে, অনেক বার। কানাডায় আমার এক বন্ধু থাকে। ওর মুখেই তোমার সমস্ত খবর পেয়েছি। বছর চারেক আগে। সাহস করে যোগাযোগ করতে পারিনি। আমি যা করেছিলাম সেই জন্যে আমার অনেক অনুশোচনা হয়। বয়েস কম ছিল, গর্দভ ছিলাম। মনে আছে তুমি আমার উপর কি ভীষণ রেগে গিয়েছিলে? বলেছিলি আমাকে ঘৃণা কর। মনে আছে?” তার কন্ঠ ভেঙে যায়। আচমকা চুপ করে যায় সে, হয়ত উদবেলিত কান্নার স্রোতটাকে দমন করতে চায়।
হয়ত এই মুহূর্তটার জন্যই অপেক্ষা করছিল রিমা। সে সশব্দে কেঁদে ওঠে। তার সমস্ত সংকোচ নিমেষে ভেঙে যায়। মনের মধ্যে জমে থাকা দুঃখ আর ক্ষোভের বোঝা হালকা করে ফেলতে চায়। রনক বাঁধা দেয় না। অবশেষে যখন রিমার কান্নার বেগে কমে আসে তখন সে শান্ত কন্ঠে বলে, “মায়ের সাথে কথা বলবে? তার এখন সময় হবে কিনা বলতে পারি না, তার সখীদের কয়েক জন এসে জমায়েত হয়েছে, কিন্তু আবেদন করে দেখতে পারি।”
রিমা কান্না ভুলে হেসে ফেলে। “না, আজ থাক। কাল বলব। আমার এতো কান্না পাচ্ছে, মায়ের সাথে আজ কথা বলতে পারব না। তোর কথা যে কত ভেবেছি, আর যা করেছিলি সেই জন্য তোকে দোষ দেই না। সেটাই স্বাভাবিক ছিল।”
“ঐসব কথা থাক আপু,” রনক গম্ভীর গলায় বলে। “যা হবার হয়ে গেছে। তোমার যা করতে হত তুমি করেছিলে। কিন্তু একটা কথা আমি তোমাকে জানাতে চাই। তোমার খবর এখানে সবাই জানে। কাগজে ছেপেছে, টেলিভিশনে দেখিয়েছে। আমার এক বন্ধু পুলিশে চাকরি করে। ও আমাকে বলেছে টরন্টো থেকে কোন এক ডিটেকটিভ ওদের ডিপার্টমেন্টে ফোন করে তোমার খোঁজ খবর নিয়েছে। তার নাম মাইক বা মার্স- ঐ ধরনের কিছু একটা। সব ঠিক ঠাক আছে তো ওখানে?”
মার্সেল! ঢাকায় কেন ওর সম্বন্ধে খবর নিচ্ছে সে?
“কবে হয়েছে এটা?” রিমা জানতে চায়।
“মাস খানেক আগে। তোমার প্রাক্তন স্বামীদের খবর নিয়েছে। তুমি জানতে না এসব?”
“ডিটেকটিভটাকে চিনি। মানুষ ভালোই। মিন্টুর মৃত্যুর কেসে কাজ করেছিল সে। তুইতো সব জানিসই নিশ্চয়। মিন্টুর ছোট ভাই পিন্টু আমাকে ভীষণ উত্যক্ত করছিল। চারদিকে গিয়ে যাচ্ছে তাই বলে বেড়াচ্ছিল। আমাকে ভয় দেখাচ্ছিল। তার হাত থেকে ঐ ডিটেকটিভই আমাকে এক রকম বাঁচিয়েছে।”
“পিন্টুর ব্যাপারে সাবধান থেকো,” রনক সতর্ক করে দেয়। “শুনেছি ওর নামে নাকি দেশে খুনের মামলা আছে। একাধিক। সেই জন্যই দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। খুব বিস্তারিত কিছু জানি না কিন্তু এমন কেস অনেক আছে বলে শুনেছি।”
“ওর ভয়ে আমি সারাক্ষণ তটস্থ হয়ে থাকি,” রিমা তার উদ্বেগটা ঢাকতে পারে না। “কিন্তু তারপরও জীবন তো চলতে থাকবে, না? আমি চেষ্টা করছি আবার পড়াশোনা শুরু করার। একটা ডিপ্লোমা জাতীয় কিছু করতে পারলে হয়ত ভালো কোন কাজ পাওয়া যাবে।”
রনক কয়েক মুহুর্তের জন্য চুপ করে থাকল। “তোমার সার্টিফিকেট, ট্রান্সক্রিপ্ট কিছুইতো নিয়ে যাওনি। সেগুলো তো তাহলে লাগবে এখন। তাই না?”
“হ্যাঁ!” রিমার ভয় হয় রনক হয়ত ভাববে সেই জন্যই রিমা এতোদিন পর ফোন করেছে।
“কিচ্ছু ভেব না, আপু, আমি সব পাঠিয়ে দেব। তুমি এখনও ক্রিসেন্ট টাউনেই থাকো, তাই না?”
“হ্যাঁ। খুব শীঘ্রই এখান থেকে চলে যাবো ভাবছি। গেলে জানাবো তোকে।”
আরেক মুহুর্তের নীরবতা। “আপু?”
“বল।”
“বিয়ের পর বউকে নিয়ে কানাডা চলে আসতে চাই। সাহায্য করতে পারবে না?”
“যা যা করতে পারি সব করব,” রিমার গলা আবেগে আবার বুঁজে আসে। “তোরা আমার এখানে আসবি এর চেয়ে আনন্দের আর কি হতে পারে?”
“আমারও খুব ইচ্ছা তোমার কাছাকাছি থাকার। কাল আবার কল করবে, তাই তো? মাকে বলে রাখব। অপেক্ষা করবে কিন্তু।”
“বাবাকেও বলিস।”
“বলব। জনাবের আবার ভয়ানক জেদ। তাও বলবখনে। কথা বললে চাইলে বলবে। এই রকম সময়েই করবে?”
“হ্যাঁ।”
ফোনটা রাখার পর রীমার ভেতরটা একটা অসম্ভব রকমের আনন্দময় অনুভূতিতে প্লাবিত হয়ে যায়। নিজের পরিবারের সাথে আবার যোগাযোগ স্থাপিত করতে পারলে তার চেয়ে বেশী আর কিছু চাইবার থাকবে না ওর। কিন্তু মার্সেল ঢাকায় ওর সম্বন্ধে খোঁজ খবর নিয়েছে সেটা জেনে একটু দুঃশ্চিন্তাও হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে ওর সম্বন্ধে কি ধরনের তথ্য পেয়েছে জানতে পারলে ভালো হত। ওকে ওর অতীত নিয়ে লোকটা কখন কোন প্রশ্ন করে নি। করলে রিমা নিজেই তাকে সব খুলে বলত। তার লুকানোর কিছু নেই। কিন্তু ঢাকায় অনেক মানুষই, বিশেষ করে লাভলুর বাবা-মা-আত্মীয়স্বজনেরা অনেক বানোয়াট কথা বার্তা রটিয়ে বেড়িয়েছে। সেই সব রটনার কোন কিছু যদি মার্সেলের কানে গিয়ে থকে তাহলে তার প্রতিক্রিয়া খুব ভালো নাও হতে পারে।